১. ক্রাইওথেরাপি কি?
ক্রাইওথেরাপি হল প্রাচীন এবং আধুনিক প্রযুক্তির সমন্বিতএকটি নতুন চিকিৎসা পদ্ধতি। প্রাচীনযুগ থেকেই বিভিন্ন ক্ষত ও ইনফেকশন চিকিৎসার জন্য বরফ ব্যবহৃত হয়ে আসছে। ক্রাইওথেরাপি বা আর-হি নাইফ থেরাপি হল বিশ্বের সর্বপ্রথম চিকিৎসা পদ্ধতি যেখানে রকেট গাইড্যান্স টেকনোলজি এবং আলট্রা লো টেম্পারেচার ও থার্মোথেরাপি ব্যবহার করে ক্যান্সারের চিকিৎসা করে। আর-হি নাইফ মার্কিন এফ.ডি.এ. কর্তৃক অনুমোদন প্রাপ্ত।
২. মূলনীতিঃ ক্রাইওথেরাপি মূলত আলট্রা লো টেম্পারেচার ও থার্মোথেরাপির সমন্বয়ে তৈরি। এই থেরাপিতে সূচের সাহায্যে টিউমারে আর্গন গ্যাস প্রয়োগ করে কয়েক সেকেন্ডের মধ্যে এর তাপমাত্রাকে কমিয়ে - ১২০ ডিগ্রি সেলসিয়াস থেকে -১৬৫ ডিগ্রিতে নিয়ে যাওয়া হয় ফলে টিউমারটি বরফের বলে রূপান্তরিত হয়। এই অবস্থায় টিউমারে রক্ত ও অক্সিজেন সরবরাহ সম্পূর্ণ বন্ধ থাকে।এর পরপরই টিউমারে সূচের মাধ্যমে হিলিয়াম গ্যাস প্রয়োগ করে এর তাপমাত্রাকে ২০-৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াসে নিয়ে যাওয়া হয়। অত্যন্ত দ্রুততার সাথে তাপমাত্রার এই পরিবর্তনের ফলে টিউমারের টিস্যু নষ্ট হয়ে যায়।
ট্রিটমেন্ট পদ্ধতিঃ সি.টি. এর নির্দেশমালার আলোকে এবং সূচের সাহায্যে ২ বার যথাক্রমে আর্গন ও হিলিয়াম গ্যাস প্রয়োগ করা হয়। সম্পূর্ণ টিউমার ও এর আশেপাশে ৫মি.মি. থেকে ১০ মি.মি. জায়গা পর্যন্ত আইস বলে রূপান্তরিত না হওয়া পর্যন্ত এই গ্যাস প্রয়োগ চলতে থাকে।
এই প্রক্রিয়ায় কোন রকম কাঁটা ছেঁড়ার দরকার হয় না। টিউমারে শুধুমাত্র সূচ প্রয়োগ করে থেরাপিটি সম্পন্ন করা হয়। সেজন্য থেরাপির পর বেশি দিন হসপিটালে থাকারও প্রয়োজন হয় না।
৩. চমকপ্রদ কার্যকারিতাঃ একটি থেরাপির তিনটি সুফল
প্রথমত, থেরাপিটি শুধুমাত্র টিউমারে প্রয়োগ করা হয় ফলে স্বাভাবিক টিস্যুগুলো ক্ষতিগ্রস্থ হয় না।
দ্বিতীয়ত, এই থেরাপির মাধ্যমে টিউমারের কোষগুলো নষ্ট হয়ে যায় এবং টিউমারে রক্ত ও অক্সিজেন সরবরাহ বন্ধ হয়ে যাওয়ার কারণে টিউমারটি মারা যায়।
তৃতীয়ত, থেরাপির পর থেকে যাওয়া টিউমারের মৃত কোষগুলো টিউমারের অ্যান্টিজেন লেভেল কে বাড়িয়ে দেয় এবং অ্যান্টি টিউমার ইফেক্ট সৃষ্টি করে।
১. জটিলতা কম কিন্তু কার্যকারিতা বেশী।
২. সার্জারি ফ্রি, সামান্য রক্তপাত এবং সূক্ষ্ম আক্রমণকারী।
৩. পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া খুব অল্প।
৪. প্রায় সব ধরণের সলিড টিউমারের ক্ষেত্রে এটি প্রয়োগ করা যায়।
৫. এটি কেমোথেরাপি, রেডিওথেরাপি বা সার্জারির পাশাপাশি ব্যবহার করা যায়।
৬. রোগীর শরীরের পক্ষে সহনশীল, অত্যন্ত কার্যকরী, এবং সাশ্রয়ী।
৭. এই থেরাপির পর অনেকদিন পর্যন্ত টিউমার ফিরে আসাকে প্রতিরোধ করা যায়।