চায়নার পুরনো বন্ধু ও কম্বোডিয়ার সাবেক রাজা ৯০ বছর বয়স্ক নরোডোম শিহানোক গত ১৫ই অক্টোবর ২০১২ তারিখে বেইজিং এ শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেছেন। তিনি অত্যন্ত মহৎ ও মার্জিত একজন ব্যক্তিত্ব ছিলেন এবং কম্বোডিয়ার স্বাধীনতার পেছনে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখে গেছেন। নিঃসন্দেহে তিনি কম্বোডিয়ানদের একজন মহান নেতা। জীবনের শেষ ২০ টি বছর তিনি ক্যান্সারের বিরুদ্ধে লড়াই করে গেছেন। ক্যান্সারের বিরুদ্ধে তার এই সাহসী লড়াই বিশ্ববাসীর জন্য একটি অনুসরনীয় দৃষ্টান্ত।
যিনি তিন-তিনটি বার ক্যান্সারকে সফলভাবে পরাস্ত করে অলৌকিক দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন।
১৯৯৩ সাল থেকে শিহানোক লিম্ফোমা ও প্রোস্টেট ক্যান্সার সহ বিভিন্ন জটিল রোগে ভুগছিলেন। প্রচণ্ড অসুস্থতার মাঝেও তিনি কখনোই হাল ছেড়ে দেননি। ২০০৯ সালে শিহানোক তার ব্যক্তিগত ওয়েব সাইটে তার লেখা একটি চিঠি প্রকাশ করেন যেখানে ক্যান্সারের সাথে তার এই লড়াই নিয়ে বিভিন্ন দিক তুলে ধরেন এবং জানান যে কিভাবে তিনি তিন- তিনটি বার ক্যান্সারকে পরাস্ত করেছেন। এই চিঠিতে তিনি মডার্ন ক্যান্সার হসপিটাল গুয়াংজৌ এর ডাক্তারদের প্রতি তার আন্তরিক কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন এভাবে- “ ৮৫ বছর বয়সেও যে আমি ক্যান্সারের বিরুদ্ধে লড়াই করে বেঁচে আছি তার সম্পুরন কৃতিত্বই আমার বন্ধুদেশ চায়নার কেননা সেখানকার অভিজ্ঞ ডাক্তার ও সুদক্ষ নার্সরাই আমাকে সুস্থ করে তুলেছে।”
টি.সি.এম ও ওয়েস্টার্ন মেডিসিনের সমন্বয় ক্যান্সার চিকিৎসায় নতুন সম্ভাবনার সৃষ্টি করেছে।
শিহানোকের অ্যান্টি-ক্যান্সার থেরাপিগুলো এতোটাই সফল ছিল যে তা বিশ্বব্যাপী আলোড়ন সৃষ্টি করে। শিহানোক তার ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতার আলোকে আমাদেরকে বলেন যে ক্যান্সার মানেই মৃত্যু নয়। সায়েন্টিফিক ও উপযুক্ত ট্রিটমেন্ট গ্রহন করে ক্যান্সারের মত দুরারোগ্য অসুখকেও নিয়ন্ত্রন করা যায়।
চাইনিজ পিপ্ল পলিটিকাল কনসাল্টেটিভ কনফারেন্স এর মেম্বার এবং এশিয়ান ডিপার্টমেন্ট অব চাইনিজ ফরেন মিনিস্ট্রি এর প্রাক্তন পরিচালক চাং চিউহুয়ান তার কাজের প্রয়োজনে শিহানোকের সাথে কয়েকবার সাক্ষাৎ করেছেন। বারবারই শিহানোক তাকে বলেছেন যে চায়নাই তাকে দ্বিতীয়বার জীবন দান করেছে। প্রকৃতপক্ষে ফ্রান্স সহ বিভিন্ন পাশ্চাত্য দেশের চিকিৎসকরাই শিহানোকের বেঁচে থাকার হাল ছেড়ে দিয়েছিলেন কিন্তু কেবলমাত্র চাইনিজ চিকিৎসকরাই টি.সি.এম. ও ওয়েস্টার্ন মেডিসিনের সমন্বয় এর মাধ্যমে সফল ভাবে ক্যান্সারের চিকিৎসা করে তার জীবনকাল ৯০ বছর পর্যন্ত দীর্ঘায়িত করেছিল।
অ্যান্টি-ক্যান্সারের এই নতুন ধারার চিকিৎসা শুধুমাত্র চায়নাতেই হয়
ট্র্যাডিশনাল চাইনিজ মেডিসিন ও ওয়েস্টার্ন মেডিসিনের সমন্বয়ের মাধ্যমে চিকিৎসা কেবলমাত্র চায়নাতেই হয়। রোগ শনাক্ত করা সহ বিভিন্ন প্রকার জটিল রোগের চিকিৎসায় চায়নাতে অত্যন্ত সফলতার সাথে এই পদ্ধতি ব্যবহার করা হয়। একই সাথে চাইনিজ ও ওয়েস্টার্ন মেডিসিন এর এই যুগপৎ সমন্বয় উভয় প্রকার মেডিসিনের ঘাটতি পুরনের মাধ্যমে থেরাপির কার্যকারিতাকে আরও বাড়িয়ে দেয়।
বহু বছরের গবেষণায় মেডিকেল এক্সপার্টরা দেখেছেন যে ক্যান্সার চিকিৎসার ক্ষেত্রে চাইনিজ মেডিসিন ও ওয়েস্টার্ন মেডিসিন উভয়েরই কিছু ভালো দিক ও খারাপ দিক আছে। ক্যান্সারের চিকিৎসায় ওয়েস্টার্ন মেডিসিন অত্যন্ত শক্তিশালী ভূমিকা পালন করলেও এটি শুধুমাত্র একটি লক্ষ্য নিয়ে কাজ করায় এর ফলাফল তেম দীর্ঘস্থায়ী হয় না। অন্যদিকে চাইনিজ মেডিসিন এককভাবে ক্যান্সার চিকিৎসায় তেমন গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে না পারলেও যখন এটিকে টি.সি.এম থিয়োরির মাধ্যমে নিয়ন্ত্রিত অবস্থায় প্রয়োগ করা হয় তখন এটি রোগীর ইমিউন সিস্টেম শক্তিশালী করার পাশাপাশি কেমোথেরাপি ও রেডিওথেরাপির ক্ষতিকর বিষক্রিয়া দূরীকরণে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
একারণে ওয়েস্টার্ন ও টি.সি.এম এর সমন্বয়কৃত চিকিৎসা শুধুমাত্র থেরাপির কার্যকারিতাকে বাড়িয়েই দেয় না বরং সার্জারি ও অন্যান্য থেরাপির পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া দূরীকরণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। বিশেষ করে এডভান্স ম্যালিগ্ন্যান্সির রোগীদের ক্ষেত্রে এটি জীবন যাত্রার মান উন্নয়নের পাশাপাশি তাদের জীবনকালকে দীর্ঘায়িত করতেও সহায়ক।
ওয়েস্টার্ন মেডিসিন ও টি.সি.এম এর থেরাপি গুলোকে আরও শক্তিশালী ও কার্যকর করার লক্ষে প্রতিনিয়তই রিসার্চ চলছে। ক্যান্সারসহ বিভিন্ন জটিল রোগের চিকিৎসায় সম্ভাবনার নতুন দিগন্ত হিসেবে আন্তর্জাতিক মহলেও এটি ব্যপক সাড়া ফেলেছে।
Disclaimer: Therapeutic effect depends on individual patient's condition. The content of this website is for informational purpose only,this can not be the basis of medical diagnosis and treament and even can not replace the diagnosis and treatment from doctors. Please refer to Terms and Condition for more information.