সাম্প্রতিক বছরগুলোতে দেখা যায়,বিশ্বে প্রতি বছর প্রায় ১ কোটি মানুষ ম্যালিগন্যান্ট টিউমারে মারা যায়।এইসব ক্যান্সারের মধ্যে ওরাল ক্যান্সারের হার ১.৪৫% - ৫.৬%।ওরাল ক্যান্সার রোগীদের ক্ষেত্রে ৫ বছরের বেশি বেঁচে থাকার হার খুবই কম,সাধারণত এর হার ৬০%।সুতরাং মানুষের স্বাস্থ্যের জন্য এই ম্যালিগন্যান্ট টিউমার ভয়ানক হুমকিরস্বরুপ এবং এর চিকিৎসা পদ্ধতি খুবই গুরুত্বপূর্ণ।
প্রচলিত চিকিৎসা পদ্ধতির মধ্যে সার্জারি,রেডিওথেরাপি,কেমোথেরাপি,চাইনিজ মেডিসিন চিকিত্সা পদ্ধতি ইত্যাদি উল্লেখযোগ্য।
সার্জারি এবং রেডিওথেরাপি একক ভাবে প্রয়োগ করার চেয়ে যৌথভাবে সবচেয়ে ভাল কাজ করে।কেমোথেরাপি একটি সহায়ক চিকিৎসা হিসেবে সার্জারির পূর্বে অথবা রেডিওথেরাপির সাথে প্রয়োগ করা হয়।
রেডিওথেরাপি সার্জারির সাথে অথবা এককভাবে ওরাল ক্যান্সার চিকিত্সায় একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।এডভান্সড বা পরিণত ক্ষত যেখানে সার্ভিকাল লিম্ফ নোড মেটাস্টিসিস হয় সেসব ক্ষেত্রে শুধু রেডিওথেরাপি দিয়ে ফলপ্রসূ হয় না।এক্ষেত্রে আদর্শ চিকিৎসা পদ্ধতি হল রেডিওলোজিস্ট এবং সার্জারির সমন্বয়ে চিকিৎসা।এভাবে শরীরের নির্দিষ্ট ক্ষত চিহ্নিত,তাদের আক্রমন পদ্ধতি, দ্রুত লসিকাগ্রন্থি স্থানান্তরণ হওয়া ছাড়াও রোগীর শারীরিক শর্ত ইত্যাদির উপর ভিত্তি করে চিকিৎসা করা হয়।
কেমিক্যাল চিকিত্সা: মাথা এবং ঘাড় ক্যান্সারের অধিকাংশ যাকে সেল কার্সিনোমাস বলা হয়,এই ক্যান্সারের ক্ষেত্রে কেমোথেরাপি কম সংবেদনশীল।মাথা ও ঘাড় ক্যান্সারের ক্ষেত্রে কেমোথেরাপি এককভাবে প্রয়োগ করতে কম দেখা যায়।প্রায়ই কেমোথেরাপি রেডিওথেরাপির সাথে অথবা সার্জিক্যাল অপারেশনের সাথে প্রয়োগ করা হয়।
চাইনিজ মেডিসিন চিকিৎসা পদ্ধতিঃ: সাধারণত ওরাল ক্যান্সারের রোগীরা শারীরিকভাবে দুর্বল হয়।রোগীর শরীরে রেডিওথেরাপি ও কেমোথেরাপি কার্যকর না হলে চাইনিজ মেডিসিন দিয়ে তার রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ানো হয় এবং এ্যান্টিটিউমারের শক্তি বৃদ্ধি করা হয়।
টিউমারের মেটাস্টিসিসের(ছড়িয়ে যাওয়া) পরিমাণ বৃদ্ধি পেলে অথবা লিম্ফ নোড মেটাস্টিসিসের ক্ষেত্রে সার্জারি,রেডিওথেরাপি এবং কেমোথেরাপি প্রয়োগ করা হয়।এক্ষেত্রে এদের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া অনেক বেশী ; বর্তমানে মিনিম্যালি ইনভ্যাসিভ চিকিৎসা পদ্ধতি আধুনিক প্রযুক্তি হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে। এই পদ্ধতিতে ছোট আঘাতের সাহায্যে ক্যান্সার কোষ ধবংস করা হয়; এর ফলে রোগী দ্রুত সুস্থ হয়ে উঠে এবং চিকিত্সাগত প্রভাব লাভ করে।বেশীরভাগ রোগীই এই ধরণের চিকিৎসা পদ্ধতি পছন্দ করেন।
ভিটামিন এ ওরাল ক্যান্সার ঘটা এবং পুনরায় হওয়া থেকে রোধ করে।কিন্তু বেশী পরিমাণে ভিটামিন এ শরীরের জন্য বিষাক্ত হতে পারে তাই ভিটামিন এ বিশেষজ্ঞের পরামর্শনুযায়ী নেওয়া উচিত
রেডিওথেরাপি করার সময়ে মুখ খুলা,দাঁত মাজার ক্ষেত্রে বিভিন্ন ধরণের সমস্যা হতে পারে।এক্ষেত্রে রোগী বিভন্ন ধরণের হালকা ব্যয়াম করতে পারেন; এছাড়াও নরম ব্রাশের সাহায্যে অথবা মাউথ ওয়াসের সাহায্যে আস্তে আস্তে কুলকুচি করে মুখ ধুতে পারেন।স্প্রাউট জুস অথবা ঠান্ডা ক্যামোমিল চা পান করার ফলে মুখের লুকানো গ্ল্যান্ডের শক্তি বৃদ্ধি এবং মুখের রুক্ষতা দূর করা যায়। এসিডোফুলাস নামক এক ধরণের ব্যাকটেরিয়া ব্যবহার করে মুখ পরিস্কার করা হয় এর সাথেও স্বাস্থ্যকর খাবার দেওয়া হয়।প্রতিদিন রোগীকে এই থেরাপি বার বার দেওয়া হয়।
মডার্ণ ক্যান্সার হসপিটাল গুয়াংজৌ বিশেষজ্ঞগন রোগীর চিকিৎসা পদ্ধতি নির্বাচন করার ক্ষেত্রে ডাক্তারদের অভিজ্ঞতা এবং দক্ষতার সাথেও হাসপাতালের অন্যান্য সুযোগ সুবিধার কথাও উল্লেখ করেন। রোগীর অবস্থা সঠিকভাবে মূল্যায়ন করে বিভিন্নভাবে পর্যলোচনা করে উপযোগী চিকিৎসা পদ্ধতি নির্বাচন করা উচিত।ওরাল ক্যান্সারের সঠিক চিকিৎসা পদ্ধতি নির্বাচন করার উপর এর সাফল্য ও ব্যর্থতার হার নির্ধারণ করে।