ব্রেস্ট ক্যান্সারের জন্য ক্রাইওথেরাপি
ব্রেস্ট ক্যান্সারে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা যেমন বারছে তেমনি এর চিকিৎসা পদ্ধতিও দিন দিন উন্নত হচ্ছে। ক্যান্সারের মত রোগের চিকিৎসায় আমরা অত্যন্ত আধুনিক চিকিৎসা পদ্ধতি ব্যবহারের সাথে সাথে ব্রেস্ট ক্যান্সারের চিকিৎসা হিসেবে বেশ কিছু নতুন থেরাপি উদ্ভাবন করতে পেরেছি। মডার্ন ক্যান্সার হসপিটালের বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের মতে সার্জারি ই এখন ব্রেস্ট ক্যান্সারের একমাত্র সফল চিকিৎসা নয়, এর সাথে যোগ হয়েছে আর-হি নাইফ ক্রাইওথেরাপি যা কিনা অনেক কার্যকর ভাবে এই রোগের চিকিৎসা করতে পারে।
ব্রেস্ট ক্যান্সারের নতুন চিকিৎসা পদ্ধতি, আর-হি নাইফঃ
মডার্ন ক্যান্সার হসপিটাল গুয়াংজৌ ব্রেস্ট ক্যান্সার চিকিৎসায় আন্তর্জাতিক ভাবে উন্নত চিকিৎসা পদ্ধতি আর-হি নাইফ বা ক্রাইওথেরাপি ব্যবহার করে থাকে। আর-হি নাইফ হল ইউ.এস এর এফ.ডি.এ দ্বারা স্বীকৃত একটি চিকিৎসা পদ্ধতি যা অত্যন্ত সঠিক উপায়ে নির্ধারিত ক্যান্সার কোষকে ধ্বংস করতে পারে। এক্ষেত্রে ছুরি হতে নির্গত হওয়া আর্গন গ্যাস মাত্র ৬০ সেকেন্ডে টিউমারের তাপমাত্রাকে -১২০ ডিগ্রি থেকে -১৬৫ ডিগ্রি পর্যন্ত নিয়ে গিয়ে টিউমারটিকে বরফের বলে রূপান্তরিত করে। এরপর ছুরি হতে হিলিয়াম গ্যাস নির্গত হয়ে টিউমারের তাপমাত্রাকে অত্যন্ত বাড়িয়ে দেয়। এত দ্রুত তাপমাত্রা ওঠা-নামার ফলে টিউমারটি তা সহ্য করতে পারেনা এবং ধ্বংস হয়ে যায়। এর মাধ্যমে টিউমারের অ্যান্টিজেনও নিয়ন্ত্রন করা হয় বলে অ্যান্টি-টিউমার ইফেক্ট সৃষ্টি হয়।
ব্রেস্ট ক্যান্সারের ক্ষেত্রে আর-হি নাইফ, টিউমার সেল মেটাস্টাসিস বা রিকারেন্স এর মত অনেক জটিল সমস্যার সমাধান করতে পারে ফলে সামগ্রিকভাবে রোগীর শারীরিক অবস্থার উন্নতি ঘটে। এর প্রধান সুবিধাগুলি হল এটি শুধুমাত্র টিউমারের উপরই প্রভাব ফেলে,সুনির্দিষ্ট অপসারণ এবং স্বল্প ক্ষত বিশিষ্ট, স্বল্প পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া ও কম বেদনাদায়ক এবং অত্যন্ত কার্যকর চিকিৎসা ক্ষমতা সম্পন্ন। গতানুগতিক সার্জারির তুলনায় এটি ঝুঁকি ও জটিলতা মুক্ত। মাইক্রোওয়েভ, রেডিও ফ্রিকোয়েন্সি এবং অন্যান্য মিনিম্যালি ইনভ্যাসিভ থেরাপির তুলনায় এটি অত্যন্ত কার্যকর ভাবে চিকিৎসা ব্যবস্থা পর্যালোচনা করতে পারে এবং আনেস্থেশিয়ার সিমাবদ্ধতা মুক্ত। কেমোথেরাপি এবং রেডিওথেরাপির তুলনায় এর সুবিধা হল এক্ষেত্রে টিউমার কোষ গুলো কেমোথেরাপির মেডিসিনের জন্য সেনসিটিভ কিনা বা ডোজ কেমন হবে ইত্যাদি নিয়ে ভাবতে হয় না।
আমাদের চিকিৎসা; দুটি থেরাপিতে তিনটি সুবিধাঃ
আর-হি নাইফের প্রধান দিক হল আর্গন গ্যাসের হিমায়িতকরন এবং হিলিয়াম গ্যাসের উষ্ণকরন ব্যবস্থা। আর্গন গ্যাস টিউমার কোষ ধ্বংস না হওয়া পর্যন্ত তা বরফের মত শীতল করে রাখে কিন্তু এতে অন্যান্য স্বাভাবিক টিস্যু গুলোতে কোন প্রভাব পড়ে না। এরপর হিলিয়াম গ্যাস দিয়ে টিউমারের তাপমাত্রা বাড়িয়ে দ্বিতীয়বার আর্গন গ্যাস দিয়ে টিউমারকে হিমশীতল করা হয়। এভাবে তাপমাত্রা কমানো ও বাড়ানোর ফলে টিউমার কোষ ধংস হয়ে যায় এবং যে শিরার মাধ্যমে টিউমারে অক্সিজেন প্রবেশ করে সেটিও বন্ধ হয়ে যায়। এটি টিউমারের অ্যান্টিজেন নিয়ন্ত্রন করে এবং অ্যান্টি টিউমার ইফেক্ট সৃষ্টি করে। হিমায়িত টিউমার রেডিও থেরাপি এবং কেমোথেরাপির জন্য বেশী স্পরশকাতর হওয়ায় কেমোথেরাপি ও রেডিওথেরাপির কার্যকারিতাও বেড়ে যায়। এভাবে একটি ট্রিটমেন্ট দুইবার দিয়ে তিনটি চিকিৎসা সুফল পাওয়া সম্ভব।
সাম্প্রতিক সময়ে আর-হি নাইফ থেরাপি দিয়ে ব্রেস্ট ক্যান্সারের চিকিৎসা করে মডার্ন ক্যান্সার হসপিটাল গুয়াংজৌ বেশ সফল হয়েছে এবং অসংখ্য রোগীর আস্থা অর্জনে সক্ষম হয়েছে।
scrollTop