ব্রেস্ট ক্যান্সারের জন্য কেমোথেরাপি
ব্রেস্ট ক্যান্সার মহিলাদের জন্য অত্যন্ত প্রচলিত একটি ক্যান্সার। গর্ভাশয়ের ক্যান্সারের থেকেও ব্রেস্ট ক্যান্সার হওয়ার হার বেশী এবং সকল প্রকার ক্যান্সার এর মধ্যে ৭%-১০% ই এই ক্যান্সার। এটি মহিলাদেরকে মানসিক ও শারীরিক ভাবে ক্ষতি গ্রস্থ করার পাশাপাশি তাদের স্বাভাবিক জীবন যাত্রাকেও ব্যহত করে।
কেমোথেরাপির পার্শ্ব প্রতিক্রিয়াঃ কেমোথেরাপি ব্রেস্ট ক্যান্সারের ক্ষেত্রে একটি অন্যতম চিকিৎসা ব্যবস্থা যা সার্জারির আগে বা পরে দেওয়া হয়। এটি কান্সারকে নিয়ন্ত্রনে আনতে পারলেও এর বেশ কিছু পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া আছে। এমন অনেক রোগী আছেন যারা সার্জারির ব্যথা সহ্য করতে রাজি আছেন কিন্তু কোন অবস্থাতেই আর কেমোথেরাপি নিতে চান না।
সবার আগে জেনে নেয়া যাক কেমোথেরাপির কি কি পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া আছে।
সাধারণত দেখা যায় ক্যান্সারের জন্য যেসব মেডিসিন ব্যবহার করা হয় তা ক্যান্সার কোষের সাথে সাথে অন্যান্য স্বাভাবিক কোষ গুলোতেও প্রভাব ফেলে। কেমোথেরাপির প্রধান প্রধান পার্শ্ব প্রতিক্রিয়ার মধ্যে রয়েছে-
১. কিছু কিছু কেমোথেরাপির মেডিসিন অন্ত্রের কোষ ঝিল্লীকে ক্ষতি গ্রস্থ করে ফলে ডায়রিয়া হতে পারে।
২. এডিরামাইসিনের মত কিছু ওষুধের কারণে চুল পড়ে যায় এবং হার্ট ও ক্ষতিগ্রস্থ হয়।
৩.কেমোথেরাপির ওষুধ রোগীর পাকস্থলী ও মস্তিষ্ক কে ক্ষতিগ্রস্থ করে ফলে বমি বমি ভাব বা বমি হতে পারে।
৪. কেমোথেরাপি অস্থিমজ্জার লাল রক্ত কনিকা উৎপাদন প্রক্রিয়াকে ক্ষতিগ্রস্থ করে ফলাফল সরূপ শরীর অত্যন্ত ক্লান্ত থাকে, ঘুম ঘুম ভাব হয় এবং শ্বাস-প্রশ্বাস সংক্ষিপ্ত হয়ে যায়।
৫. সাইটোক্সান মূত্রথলিতে প্রভাব ফেলে ফলে প্রসাবের সময় জ্বালা পোড়া,ঘন ঘন প্রসাব, জ্বর ইত্যাদি হয়ে থাকে।
৬. অনেক অ্যান্টি ক্যান্সার মেডিসিন রক্ত উৎপাদন প্রক্রিয়াকে ক্ষতিগ্রস্ত করে ফলে রক্তে শ্বেত কণিকার পরিমাণ কমে যায় এছাড়াও মুখ, ত্বক, ফুসফুস ইত্যাদিতে বিভিন্ন ইনফেকশন হতে পারে।
৭. কেমোথেরাপির ফলে প্রকট কোষ্ঠকাঠিন্য দেখা দেয় ফলে। কেমোথেরাপির পর ঠিক মত খাওয়া দাওয়া না করলে কোষ্ঠকাঠিন্য হতে পারে।
কেমোথেরাপির পার্শ্ব প্রতিক্রিয়ার কারণে থেরাপির পর রোগীকে বেশী করে পানি ও সহজে হজম হয় এমন খাবার খেতে বলা হয় যাতে কিডনি কম ক্ষতিগ্রস্থ হয়। থেরাপির পর রোগী মানসিক ভাবে অনেক ভেঙ্গে পড়তে পারেন।সেজন্য তাকে স্বাভাবিক রাখতে ম্যাগাজিন বা বিভিন্ন আর্ট বই পড়তে দেওয়া যেতে পারে বা মানসিক প্রশান্তির জন্য গান শোনার ব্যবস্থাও করা যেতে পারে।
কেমোথেরাপির বিকল্প কোন চিকিৎসা আছে কি?
মডার্ন ক্যান্সার হসপিটাল গুয়াংজৌ এর আর-হি নাইফ থেরাপি সার্জারি, কেমোথেরাপি এবং রেডিওথেরাপির পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া মুক্ত। এই চিকিৎসা প্রযুক্তি অত্যন্ত কার্যকর ভাবে টিউমার ধ্বংস করতে পারে। আর-হি নাইফ থেরাপি হল স্পেইস রকেট টেকনোলোজি দ্বারা পরিচালিত প্রথম উচ্চ নির্ভুলতা সম্পন্ন থেরাপি এবং এটি ক্রাইওথেরাপি ও হিট ট্রিটমেন্ট উভয়ের প্রভাবসম্পন্ন। মডার্ন ক্যান্সার হসপিটাল গুয়াংজৌ ব্রেস্ট ক্যান্সার চিকিৎসায় আন্তর্জাতিক ভাবে উন্নত চিকিৎসা পদ্ধতি আর-হি নাইফ বা ক্রাইওথেরাপি ব্যবহার করে থাকে। আর-হি নাইফ হল ইউ.এস এর এফ.ডি.এ দ্বারা স্বীকৃত একটি চিকিৎসা পদ্ধতি যা অত্যন্ত সঠিক উপায়ে নির্ধারিত ক্যান্সার কোষকে ধ্বংস করতে পারে। এক্ষেত্রে ছুরি হতে নির্গত হওয়া আর্গন গ্যাস মাত্র ৬০ সেকেন্ডে টিউমারের তাপমাত্রাকে -১২০ ডিগ্রি থেকে -১৬৫ ডিগ্রি পর্যন্ত নিয়ে গিয়ে টিউমারটিকে বরফের বলে রূপান্তরিত করে। এরপর ছুরি হতে হিলিয়াম গ্যাস নির্গত হয়ে টিউমারের তাপমাত্রাকে অত্যন্ত বাড়িয়ে দেয়। এত দ্রুত তাপমাত্রা ওঠা-নামার ফলে টিউমারটি তা সহ্য করতে পারেনা এবং ধ্বংস হয়ে যায়। এর মাধ্যমে টিউমারের অ্যান্টিজেনও নিয়ন্ত্রন করা হয় বলে অ্যান্টি-টিউমার ইফেক্ট সৃষ্টি হয়।
ব্রেস্ট ক্যান্সারের ক্ষেত্রে আর-হি নাইফ, টিউমার সেল মেটাস্টাসিস বা রিকারেন্স এর মতঅনেক জটিল সমস্যার সমাধান করতে পারে ফলে সামগ্রিকভাবে রোগীর শারীরিক অবস্থার উন্নতি ঘটে। এর প্রধান সুবিধাগুলি হল এটি শুধুমাত্র টিউমারের উপরই প্রভাব ফেলে,সুনির্দিষ্ট অপসারণ এবং স্বল্প ক্ষত বিশিষ্ট, স্বল্প পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া ও কম বেদনাদায়ক এবং অত্যন্ত কার্যকর চিকিৎসা ক্ষমতা সম্পন্ন। গতানুগতিক সার্জারির তুলনায় এটি ঝুঁকি ও জটিলতা মুক্ত। মাইক্রোওয়েভ, রেডিও ফ্রিকোয়েন্সি এবং অন্যান্য মিনিম্যালি ইনভ্যাসিভ থেরাপির তুলনায় এটি অত্যন্ত কার্যকর ভাবে চিকিৎসা ব্যবস্থা পর্যালোচনা করতে পারে এবং আনেস্থেশিয়ার সিমাবদ্ধতা মুক্ত। কেমোথেরাপি এবং রেডিওথেরাপির তুলনায় এর সুবিধা হল এক্ষেত্রে টিউমার কোষ গুলো কেমোথেরাপির মেডিসিনের জন্য সেনসিটিভ কিনা বা ডোজ কেমন হবে ইত্যাদি নিয়ে ভাবতে হয় না।
scrollTop