ব্রেস্ট ক্যান্সারের জন্য রেডিওথেরাপি
মহিলাদের যেসব ক্যান্সার হয় তার মধ্যে ব্রেস্ট ক্যান্সার অত্যন্ত প্রচলিত। এই ক্যান্সার হওয়ার সম্ভাবনা ২৫%-৩০% পর্যন্ত থাকে এবং প্রতি বছর এই ক্যান্সারে আক্রান্তের সংখ্যা বেড়েই চলেছে। ব্রেস্ট ক্যান্সারের জন্য সঠিক চিকিৎসা ব্যবস্থা নির্বাচন করা খুবই গুরুত্বপূর্ণ কারন চিকিৎসা পদ্ধতি ভেদে এর কার্যকারিতাও বিভিন্ন হয়।রেডিওথেরাপি ব্রেস্ট ক্যান্সারের জন্য এটি অন্যতম চিকিৎসা পদ্ধতি হলেও এর কিছু পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া আছে। অন্য দিকে বিভিন্ন মিনিম্যালি ইনভ্যাসিভ বা সূক্ষ্ম আক্রমণকারী থেরাপি রেডিওথেরাপির বিকল্প হিসেবে ব্যবহৃত হলে অনেক কার্যকর ফলাফল পাওয়া যায় এবং এগুলোর তেমন পার্শ্বপ্রতিক্রিয়াও নেই। সাধারন ভাবে বলতে গেলে রেডিওথেরাপিতে উচ্চ শক্তি সম্পন্ন এক্স-রে রশ্মি নির্গমন করা হয়। রেডিওথেরাপি দীর্ঘদিন ধরে ব্রেস্ট ক্যান্সার চিকিৎসায় ব্যবহৃত হয়ে আসলেও বর্তমানে রোগীরা এর পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া সম্পর্কে অনেক বেশী সচেতন হওয়ায় তারা পছন্দ করেন এমন চিকিৎসা ব্যবস্থা যা কার্যকর প্রভাব প্রদানের পাশাপাশি জীবনযাত্রারও মানও নিশ্চিত করবে।
রেডিওথেরাপির পার্শ্ব প্রতিক্রিয়াঃ রোগী ভেদে রেডিওথেরাপির পার্শ্ব প্রতিক্রিয়াও ভিন্ন। তবে সবচেয়ে বেশী যে প্রতিক্রিয়াটি দেখা যায় তা হল ত্বক অতিরিক্ত শুস্ক বা খসখসে হয়ে যায়, চুলকানি বা ত্বকে চিটচিটে ভাব দেখা যায়,অরুচি ও বমি হয়, পাকস্থলিতে ব্যথা হয় ইত্যাদি।
অন্যান্য প্রতিক্রিয়া গুলোর মধ্যে রয়েছে – ব্রেইন ক্যান্সারের ক্ষেত্রে রেডিওথেরাপি দেওয়া হলে মুখ শুস্ক হয়ে যায় ও কানে ভোঁভোঁ শব্দ শোনা যায়; ফুসফুস ক্যান্সারের ক্ষেত্রে রেডিও থেরাপি দেওয়া হলে শুকনো কাশি, গলবিলে চুলকানি ইত্যাদি হয়। এসব প্রতিক্রিয়া কিছুদিন পরই ঠিক হয়ে যায় এবং অনেক ক্ষেত্রে চিকিৎসার পর রোগী ভাল হয়ে ওঠেন। যেমন হজমতন্ত্রের প্রতিক্রিয়া সঠিক ডায়েটের মাধ্যমে ভাল হয়ে যায় এবং প্রচুর পরিমাণ পুষ্টিকর খাবার গ্রহনের মাধ্যমে রোগী দ্রুত এসব পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া কাটিয়ে উঠতে পারেন। কিন্তু পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া অনেক তীব্র হলে থেরাপি বন্ধ করে দেওয়াই উত্তম।
ব্রেস্ট ক্যান্সার চিকিৎসায় মিনিম্যালি ইনভ্যাসিভ থেরাপির কার্যকারিতাঃ
মডার্ন ক্যান্সার হসপিটাল গুয়াংজৌতে রয়েছে আর-হি নাইফ, ক্রাইওথেরাপি, ফটোডায়নামিক টেকনোলজি, রেডিও ফ্রিকোয়েন্সি আব্লেশন নাইফ, বায়োইমিউনো থেরাপি এন্ডওজেনিক ম্যাগনেটিক ফিল্ড থার্মোলজি, লোকাল আর্টেরি ইন্টারভেনশনাল এমবোলোথেরাপির মত আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত ও সর্বাধুনিক প্রযুক্তির বিভিন্ন মিনিম্যালি ইনভ্যাসিভ বা সূক্ষ্ম আক্রমণকারী থেরাপিসমূহ। মধ্য এবং পরিনত পর্যায়ের টিউমারের চিকিৎসায়ও এই ধরনের থেরাপি অনেক ভাল ফল প্রদান করতে সক্ষম। যেমন মার্কিন মহাকাশ গবেষণাকেন্দ্র কর্তৃক পরিকল্পিত আর-হি নাইফ থেরাপি ক্যান্সার কোষকে -১৬০ ডিগ্রি তাপমাত্রায় নিয়ে গিয়ে তাকে বরফের মত জমিয়ে ফেলে ধ্বংস করে এবং এতে অন্য স্বাভাবিক কোষ সমূহ কোন রকম ক্ষতি গ্রস্থ হয় না। রেডিও ফ্রিকোয়েন্সি আব্লেশন প্রযুক্তিও ত্বক ভেদ করে টিউমারের মধ্যে প্রবেশ করে উচ্চ তাপ প্রয়োগের মাধ্যমে ক্যান্সার কোষ কে পুড়িয়ে ফেলে এর ফলে ক্যান্সার কোষ ধ্বংস হয়ে যায়। অন্য দিকে মডার্ন এন্ডওজেনিক ম্যাগনেটিক ফিল্ডও উচ্চ তাপ প্রয়োগ করে টিউমারকে মেরে ফেলে কিন্তু এক্ষেত্রে কম্পিউটার দ্বারা নিয়ন্ত্রিত এন্ডওজেনিক ম্যাগনেটিক ফিল্ড থেরাটোলোজি সিস্টেম ব্যবহার করা হয়। এটি আন্তর্জাতিক পরিসরে “গ্রীন থেরাপি” নামে পরিচিত। ফটো ডায়নামিক প্রযুক্তি ক্যান্সার কোষকে ধ্বংস করতে ফটো একটিভ রিয়াকশন ব্যবহার করে। বায়ো ইমিউনোথেরাপি রোগীর রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কে বাড়ায় এবং ক্যান্সার পুনরায় ফিরে আসাকে প্রতিরোধ করে।
সঠিক চিকিৎসা পদ্ধতি নির্বাচনের মাধ্যমেই কার্যকর ফলাফল পাওয়া সম্ভব। কোন রকম শারীরিক অসুবিধা দেখা দিলেই পরীক্ষার জন্য হাসপাতালে যেতে হবে কেননা ক্যান্সার এর ক্ষেত্রে সঠিক সময়ে চিকিৎসা গ্রহন করা অনেক গুরুত্বপূর্ণ।
scrollTop