প্রোস্টেট ক্যান্সার
প্রোস্টেট ক্যান্সার কি?
প্রোস্টেটিক টিস্যু তে জন্মানো ম্যালিগন্যান্ট টিউমারকে প্রোস্টেট ক্যান্সার বলে। প্রোস্টেটিক এসিনার কোষ এর অস্বাভাবিক বৃদ্ধির ফলে এই ক্যান্সার হয়।
প্রোস্টেট ক্যান্সারের হার কত ?
৪৫ বছর এর কম বয়সী পুরুষদের প্রোস্টেট ক্যান্সার খুবই কম হয়। বয়স বাড়ার সাথে সাথে এই ক্যান্সার হওয়ার ঝুঁকিও বাড়ে এবং যাদের বয়স ৬৫ এর বেশী তাদের এই ক্যান্সার বেশী হয়। ৪০ বছর বয়সের পর থেকে প্রতি ১০ বছর পর পর এই ক্যান্সার হওয়ার ঝুঁকি দ্বিগুণ হারে বাড়তে থাকে। যাদের বয়স ৫০-৫৯ তাদের ক্ষেত্রে এই ক্যান্সার হওয়ার সম্ভাবনা ১০% এবং যাদের বয়স ৮০-৮৯ তাদের ক্ষেত্রে এই ক্যান্সারের ঝুঁকি ৭০% পর্যন্ত হয়ে থাকে।
প্রোস্টেট ক্যান্সার কেন হয়?
১) বয়সের কারনেই সাধারণত প্রোস্টেট ক্যান্সার হয়।
২) বংশগত কারনেও অনেক সময় এই ক্যান্সার হয়ে থাকে।
৩) জাতি গত কারনেও এই ক্যান্সার হয়ে থাকে। যেমন আফ্রিকান আমেরিকান দের মধ্যে এই ক্যান্সার সবচেয়ে বেশী দেখা যায় অন্যদিকে স্প্যানিশ, শ্বেতাঙ্গ আমেরিকান ও কৃষ্ণাঙ্গ আফ্রিকানদের এই ক্যান্সার সবচেয়ে কম হয়।
৪) অস্বাভাবিক হারে প্রোস্টেট এর ভেতরে মাংস বেড়ে গেলে এবং দীর্ঘদিন কোন ট্রিটমেন্ট নেয়া না হলে সেখানে ক্যান্সার হয়ে যেতে পারে।
অন্যান্য কারনঃ
১) ডায়েটঃ যেসব পুরুষরা অতিরিক্ত চর্বি জাতীয় খাবার খান তাদের এই ক্যান্সার হওয়ার ঝুঁকি থাকে।
২) এনড্রোজেন লেভেলঃ শরীরের অভ্যন্তরে এনড্রোজেন মাত্রার তারতম্য এর কারনেও এই ক্যান্সার হতে পারে।
প্রোস্টেট ক্যান্সারের লক্ষণঃ
১) প্রসাব করতে বিভিন্ন অসুবিধা হওয়া, প্রসাব ধরে রাখতে অসুবিধা হওয়া, প্রসাব পুরোপুরি বের না হওয়া, ব্যথা ইত্যাদি লক্ষণ দেখা দেয়।
২) মূত্রাশয়ে প্রসাব জমে থাকে এবং পিঠের নিম্নাংশে ব্যথা হয়ে থাকে।
৩) প্রোস্টেট ক্যান্সার থেকে অনেক সময় বোন মেটাস্টাসিস হয়ে যায় সে কারনে লক্ষণ হিসেবে নার্ভের দুর্বলতা ও হাড়ের ফ্রাকচার ও দেখা দিয়ে থাকে।
প্রোস্টেট ক্যান্সার নির্ণয় পদ্ধতিঃ
১) রেকটাল টাচ্
২)সেরাম প্রোস্টেট স্পেসিফিক এন্টিজেন এসে।
৩) এসে অব স্পেসিফিয়া এসিড ফসফেটেস অফ প্রোস্টেট।
৪) আলট্রা সাউন্ড এক্সামিনেশন।
৫) এক্স রে এক্সামিনেশন
৬) বায়প্সি
৭) সি.টি. স্ক্যান/ এম.আর.আই.
প্রোস্টেট ক্যান্সার কিভাবে ছড়ায়?
প্রোস্টেট ক্যান্সার রক্ত এবং শিরার মাধ্যমে প্রধানত হাড় এবং ফুসফুস এ ছড়ায়। পেল্ভিস, ভারট্যাবরা, পাঁজর,ফেমারস্ , ক্ল্যাভিকেল ইত্যাদিও আক্রান্ত হতে পারে। প্রোস্টেট ক্যান্সারও অন্য ক্যান্সারগুলোর মত আস্তে আস্তে পুরো শরীরে ছড়িয়ে পড়ে।
প্রোস্টেট ক্যান্সারের চিকিৎসাঃ
১) সার্জারিঃ এটি প্রোস্টেট ক্যান্সারের জন্য সবচেয়ে প্রচলিত চিকিৎসা। এর মাধ্যমে প্রোস্টেট এর আক্রান্ত জায়গা অপসারণ করে ফেলা হয়।
২) রেডিও থেরাপিঃ তিন ধরনের রেডিও থেরাপি আছে
ক) এক্সটারনাল রেডিয়েশন
খ) অভ্যন্তরীণ রেডিয়েশন
গ) সাধারণ রেডিয়েশন
৩) কেমোথেরাপিঃ এটি প্রোস্টেট ক্যান্সার এর জন্য সাধারণ একটি চিকিৎসা।
৪) সূক্ষ্ম আক্রমণকারী থেরাপিঃ যাদের কান্সার প্রাথমিক পর্যায়ে রয়েছে অর্থাৎ ক্যান্সার কোষ আশেপাশে খুব একটা ছড়ায়নি সেক্ষেত্রে সার্জারি করা হয়। প্রয়োজন হলে কিছু কিছু ক্ষেত্রে সার্জারির পর রেডিওথেরাপি এবং কেমোথেরাপি দেয়া হয়। পরিণত পর্যায়ের ক্যান্সার রোগীদের সার্জারি করার সুযোগ খুব কম থাকে এক্ষেত্রে তাদের জন্য উপযুক্ত হল বিভিন্ন সূক্ষ্ম আক্রমণকারী থেরাপি যেমন আয়োডিন পার্টিকেল ইমপ্লানটেশন, ইন্টারভেনশনাল থেরাপি এবং ক্রাইওথেরাপি। এধরনের রোগীদের জন্য এগুলো হল বহুল ব্যবহৃত থেরাপি কারণ এতে কাটা-ছেঁড়ার প্রয়োজন হয় না এবং রোগী খুব তাড়াতাড়ি সুস্থ হয়ে উন্নত জীবন যাপন করতে পারেন।
প্রোস্টেট ক্যান্সার রোগীর যত্নঃ
১) মানসিক যত্নঃ রোগীর সাথে সব সময় ভাল ব্যবহার করতে হবে, তাকে হাসি খুশি রাখতে হবে।
২) ডায়েট ঃ সহজে হজম হয় এমন সব পুষ্টিকর খাবার খেতে হবে। প্রচুর পরিমাণে পানি পান করতে হবে এবং তেল ও মশলা জাতীয় খাবার খাওয়া যাবেনা। আঁশ যুক্ত খাবার খেতে হবে যাতে নিয়মিত পায়খানা হয়।
৩) সাইটোপ্লাজম হলেঃ এক্ষেত্রে রোগীকে জোরে জোরে দীর্ঘশ্বাস নিতে হবে এবং ব্যথা কমানোর জন্য ম্যাসাজ করতে হবে। যদি অপারেশনের পর সাইটোপ্লাজম দেখা দেয় সেক্ষেত্রে পেইন কিলার নেওয়া যেতে পারে।
এছাড়াও তাড়াতাড়ি সুস্থ হওয়ার জন্য পর্যাপ্ত ঘুম এবং পরিপূর্ণ বিশ্রাম নিতে হবে ।
আমরা কি ধরনের সুবিধা দিয়ে থাকি?
বাস্তব অভিজ্ঞতায় দেখা যায় যেসব হসপিটাল এ মাল্টিপল ডিসিপ্লিন থাকে যেমন অঙ্কসার্জারি , অঙ্কলজি, প্যাথলজি, ইমেইজলজি ইত্যাদি সহ এনেস্থেশিয়ার ডাক্তার এবং অভিজ্ঞ নার্স থাকে তাদের চিকিৎসা ব্যাবস্থা অত্যন্ত উন্নত, সাশ্রয়ী, উপযুক্ত ও কার্যকর হয়।
মডার্ন ক্যান্সার হসপিটাল গুয়াংজৌ এর “ওয়ান স্টপ” মেডিকেল সিস্টেম এ রয়েছে একাধিক মেডিকেল বিভাগের সমন্বয় যা রোগীর প্রয়োজন অনুযায়ী যে কোন সময় এ রোগ নির্ণয়ের সুবিধা প্রদান করে। এর ফলে ডায়াগনোসিস বা রোগ নির্ণয়ের জন্য রোগীকে কোন ঝামেলায় পড়তে হয়না। সুতরাং একদিকে এটি যেমন উন্নত ও আন্তরিক সব ধরনের চিকিৎসা সেবা প্রদান করে তেমনি অন্য দিকে এটি চিকিৎসার কার্যকারিতা ও মান নিশ্চিত করে। ডাক্তারদের সাথে রোগীরা যাতে সহজে যোগাযোগ করতে পারেন সেজন্য এখানে বিভিন্ন ব্যবস্থা রয়েছে যেমন অনলাইন কন্সালটেশন, ই-মেইল, টেলিফোন কনভারসেশন, ফেইস টু ফেইস বা সরাসরি কন্সালটেশন এর সুবিধা। একজন ক্যান্সার রোগীকে এই ধরনের সেবা বিভিন্ন ভাবে সাহায্য করে থাকে। এখানকার মেডিকেল টিম বিভিন্ন বিশেষজ্ঞ ডাক্তার, নার্স, পুষ্টিবিদ,অনুবাদক প্রভৃতির সমন্বয়ে গঠিত যাতে যে কোন দেশের যে কোন পর্যায়ের রোগীকে আন্তরিক সেবা দেয়া সম্ভব হয়। চিকিৎসা চলাকালীন সময়ে ডাক্তার এবং হসপিটাল কর্তৃপক্ষের সাথে যোগাযোগের ক্ষেত্রে কোনরূপ বাধা না থাকায় রোগীরা আরও আত্মবিশ্বাসী হয়ে ওঠেন।
চলাকালীন সময়ে ডাক্তার এবং হসপিটাল কর্তৃপক্ষের সাথে যোগাযোগের ক্ষেত্রে কোনরূপ বাধা না থাকায় রোগীরা আরও আত্মবিশ্বাসী হয়ে ওঠেন।
scrollTop