লিম্ফোমা কি ?
লিম্ফোমা হল একধরনের ম্যালন্যান্ট টিউমার যা লসিকা গ্রন্থি থেকে শুরু হয়। বর্তমানে ৭০ ধরনের লিম্ফোমা আছে যা দুই ভাগে ভাগ করা যায়ঃ হজকিন লিম্ফোমা এবং নন-হজকিন লিম্ফোমা।
লিম্ফোমা কেন হয়?
১) রেডিয়েশনঃ রেডিয়েশন এর সংস্পর্শে থাকলে লিম্ফোমা হতে পারে।
২) কেমিক্যালঃ বিভিন্ন কেমিক্যাল যেমন কীটনাশক, হেয়ার ডাই ইত্যাদির কারনে লিম্ফোমা হতে পারে।
৩) রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাঃ এইডস এর মত সংক্রামক, অঙ্গ প্রতিস্থাপন ইত্যাদি কারনেও লিম্ফোমা হতে পারে।
৪) বংশগত কারনঃ পরিবারে কারও ম্যালিগন্যান্ট টিউমার হওয়ার ইতিহাস থাকলে অন্যদের লিম্ফোমা হতে পারে।
৫) ভাইরাসের কারনেঃ বিভিন্ন ভাইরাস যেমন এইচ.টি.এল.ভি, এইচ.আই.ভি, ই.বি. ইত্যাদির কারনেও লিম্ফোমা হতে পারে।
এছাড়াও দীর্ঘদিন ধরে এসিড জাতীয় কোন কিছুর সংস্পর্শে থাকলেও লিম্ফোমা হতে পারে।
কাদের লিম্ফোমা হয়?
পরিসংখ্যানে দেখা গেছে সারা বিশ্বে প্রতি ৯ মিনিটে একটি করে লিম্ফোমা কেইস পাওয়া যায়। যাদের বয়স ২০-৪০ তাদের লিম্ফোমা হওয়ার সম্ভাবনা সবচেয়ে বেশী থাকে কারণ এই বয়সে লিম্ফোমা টিস্যু বেশী একটিভ থাকে।
লিম্ফোমার লক্ষণ কি কি ?
১) কোন কারণ ছাড়া জ্বর হওয়া। অনেকদিন ধরে জ্বর থাকে এবং ট্রিটমেন্টের পরে সাময়িক ভাবে জ্বর গেলেও আবার ফিরে আসে।
২) লসিকা গ্রন্থি বড় হয়ে যায়। বিশেষ করে গলার,কানের,বগলের জায়গাগুলোতে। এগুলো বড় হয়ে সয়াবিনের আকারের হতে পারে কিন্তু কোন ব্যথা থাকেনা।
৩) অন্যান্য লক্ষণঃ রক্ত স্বল্পতা, চুলকানি, রাতে ঘাম হওয়া ইত্যাদি লক্ষণ দেখা যায়।
লিম্ফোমা সনাক্তকরণ পরীক্ষা ঃ
১) রেডিও একটিভ এক্সামিনেশন।
২) বোনম্যারো এক্সামিনেশন।
৩) লোয়ার এক্সট্রিমিটি লিম্ফোগ্রাফি ।
৪) সি.টি. স্ক্যান।
লিম্ফোমার কি কি চিকিৎসা আছে?
১) সার্জারিঃ গ্যাসট্রয়েনটেস্টিনাল ট্র্যাক্ট লিম্ফোমা, জেনিটোরিনারি সিস্টেমের ম্যালিগন্যান্ট লিম্ফোমা, প্লীহার লিম্ফোমা ইত্যাদির জন্য সার্জারি সবচেয়ে প্রচলিত।
২) কেমোথেরাপিঃ এর মাধ্যমে ক্যান্সার সেল এর বৃদ্ধি নিয়ন্ত্রন করা যায়।
৩) রেডিওথেরাপিঃ এক্ষেত্রে উচ্চ শক্তি সম্পন্ন তেজস্ক্রিয় রশ্মি দিয়ে ক্যান্সার কোষ ধ্বংস করা হয়।
৪) টি.সি.এমঃ এটি কেমোথেরাপি এবং রেডিওথেরাপির পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া কমিয়ে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়।
মডার্ন ক্যান্সার হসপিটাল গুয়াংজৌ এর বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকরা দেখেছেন যে লিম্ফোমা চিকিৎসায় সমন্বিত থেরাপি যেমন সার্জারি, কেমোথেরাপি, রেডিওথেরাপি, চাইনিজ মেডিসিন ইত্যাদি সমন্বয় করে ব্যবহার করলে চিকিৎসা আরও কার্যকর হয়।
লিম্ফোমা রোগীর যত্নঃ
১) রোগীকে যথাযথ চিকিৎসা নিয়ে ক্যান্সারের বিরুদ্ধে লড়তে উৎসাহিত করা।
২) শরীরের পুষ্টির ঘাটতি পূরণের জন্য এবং রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ানোর জন্য প্রচুর ভিটামিন ও পুষ্টি জাতীয় খাবার খেতে হবে।
৩) শারীরিক অবস্থার উন্নতির জন্য ব্যায়াম করতে হবে।
৪) হাল্কা গরম পানি দিয়ে ত্বক পরিষ্কার করা বিশেষ করে রেডিওথেরাপির জায়গাটি ভাল ভাবে পরিষ্কার করতে হবে।
আমরা কি ধরনের সেবা দিয়ে থাকিঃ
বাস্তব অভিজ্ঞতায় দেখা যায় যেসব হসপিটাল এ মাল্টিপল ডিসিপ্লিন থাকে যেমন অঙ্কসার্জারি , অঙ্কলজি, প্যাথলজি, ইমেইজলজি ইত্যাদি সহ এনেস্থেশিয়ার ডাক্তার এবং অভিজ্ঞ নার্স থাকে তাদের চিকিৎসা ব্যাবস্থা অত্যন্ত উন্নত, সাশ্রয়ী, উপযুক্ত ও কার্যকর হয়।
মডার্ন ক্যান্সার হসপিটাল গুয়াংজৌ এর “ওয়ান স্টপ” মেডিকেল সিস্টেম এ রয়েছে একাধিক মেডিকেল বিভাগের সমন্বয় যা রোগীর প্রয়োজন অনুযায়ী যে কোন সময়ই রোগ নির্ণয়ের সুবিধা প্রদান করে। এর ফলে ডায়াগনোসিস বা রোগ নির্ণয়ের জন্য রোগীকে কোন ঝামেলায় পড়তে হয়না। সুতরাং একদিকে এটি যেমন উন্নত ও আন্তরিক সব ধরনের চিকিৎসা সেবা প্রদান করে তেমনি অন্য দিকে এটি চিকিৎসার কার্যকারিতা ও মান নিশ্চিত করে। ডাক্তারদের সাথে রোগীরা যাতে সহজে যোগাযোগ করতে পারেন সেজন্য এখানে বিভিন্ন ব্যবস্থা রয়েছে যেমন অনলাইন কন্সালটেশন, ই-মেইল, টেলিফোন কনভারসেশন, ফেইস টু ফেইস বা সরাসরি কন্সালটেশন এর সুবিধা। একজন ক্যান্সার রোগীকে এই ধরনের সেবা বিভিন্ন ভাবে সাহায্য করে থাকে। এখানকার মেডিকেল টিম বিভিন্ন বিশেষজ্ঞ ডাক্তার, নার্স, পুষ্টিবিদ,অনুবাদক প্রভৃতির সমন্বয়ে গঠিত যাতে যে কোন দেশের যে কোন পর্যায়ের রোগীকে আন্তরিক সেবা দেয়া সম্ভব হয়। চিকিৎসা চলাকালীন সময়ে ডাক্তার এবং হসপিটাল কর্তৃপক্ষের সাথে যোগাযোগের ক্ষেত্রে কোনরূপ বাধা না থাকায় রোগীরা আরও আত্মবিশ্বাসী ওঠেন।