পিত্তনালীর ক্যান্সার
পিত্তনালীর ক্যান্সার কি?
পিত্তনালীর ক্যান্সার পিত্তনালী থেকে উৎপন্ন হয় এবং এতে ম্যালিগ্ন্যান্সি থাকে।পিত্তনালীর ক্যান্সার কে ২ ভাগে ভাগ করা যায়। যেমনঃ ইন্ট্রাহেপাটিক এবং এক্সট্রাহেপাটিক। এই ক্যান্সারের অধিকাংশই পোর্টা হেপাটিসে হয়ে থাকে।
শতকরা কতভাগ হারে এই ক্যান্সার হয়ে থাকে?
পিত্তনালীর ক্যান্সার প্রতিবছর গড়ে খুব কম মানুষের ক্ষেত্রেই দেখা যায়,২০০০-৩০০০ কেস এ দেখা গেছে ১০০০০০ জনে শতকরা ০.০১ – ০.৪৬ ভাগ মানুষ এতে আক্রান্ত হয়ে থাকে। দক্ষিন-পূর্ব এশিয়াতে এর হার বেশি। মহিলারা এই ক্যান্সারে বেশি আক্রান্ত হয়ে থাকেন।
এই ক্যান্সারের কারণ গুলো কি কি?
এর নিদিষ্ট কোন কারন বলতে বিলিয়ারি ট্র্যাক্ট, পিত্তথলিতে পাথর, লিভার ফ্লুক, সিস্টিক ইনফ্ল্যামাশনই প্রধান কারণ।
১। পৈত্তিক বিস্তার এর দীর্ঘস্থায়ী প্রদাহ: দীর্ঘমেয়াদী দীর্ঘস্থায়ী প্রদাহ উদ্দীপনা হল পিত্তনালী ক্যান্সার সংঘটন মূল ভিত্তি, পিত্তনালীর রোগ এবং এর দীর্ঘস্থায়ী প্রদাহ থেকেই পিত্তনালীর ক্যান্সার হয়।
২। পিত্তনালী এবং পিত্তকোষ পাথর এর পাথুরি: পিত্তনালী ক্যান্সার রোগীদের ২০-৫৭ ভাগ রোগী পাথুরি – রোগে ভোগেন বা গলব্লাডারে পাথর থাকে। দীর্ঘস্থায়ী প্রদাহই এর অন্যতম কারণ।
৩।পিত্ত এর সিস্টিক বিকলাঙ্গতাঃ জন্মগতভাবে পৈত্তিক নালীতে কোন পরিবর্তন থাকলে বা pancreaticocholang synoflowথাকলে অগ্ন্যাশয় থেকে তরল বের হয় এবং পিত্তনালীতে ধীরে ধীরে ক্যান্সারের উৎপত্তি ঘটে।
৪। লিভার ফ্লুকঃ দক্ষিন পূর্ব এশিয়াতে তাজা মাছ খাওয়ার ফলে লিভার ফ্লুকে আক্রান্ত হয় অনেকে এবং এর ফলে পিত্তনালীও আক্রান্ত হয়ে এই ক্যান্সার বিস্তার লাভ করে।
পিত্তনালী ক্যান্সার লক্ষণগুলো কি কি?
১। জন্ডিসঃ পিত্তনালী টিউমারের কারনে ব্লক হয়ে গেলে এর কারনে ধীরে ধীরে শরীরে জন্ডিস দেখা দেয় এবং এই ক্যান্সারের পেছনে এটি অন্যতম কারণ।
২। পেটে ব্যথাঃ ঊর্ধ্ব পেট খাওয়ানো পরে অস্বচ্ছন্দ বোধ করলে এর সাথে পিঠ ব্যথা করলে বা কন্ঠনালীতে প্রদাহ হলে তা এ ক্যান্সারের অন্যতম লক্ষন।
৩। জ্বরঃ পিত্তনালীর ভেতর ইনফ্ল্যাশনের ফলে জ্বর অনুভূত হয়ে থাকে।
৪। ত্বকে পাঁচড়াঃ ত্বকে কোন ধরনের পাঁচড়া দেখা দিলে এবং তা ধীরে ধিরে বৃদ্ধি পেলে ।
৫। অন্যান্য লক্ষনঃ ক্ষুধামান্দ্য, চর্বিযুক্ত খাবার, দুর্বলতা, ওজন হ্রাস, বমি বমি ভাব ও বমি করার বিরাগ ইত্যাদি অন্যতম কারণ।
পিত্তনালী ক্যান্সারের পরীক্ষণ পদ্ধতি কি?
১। ল্যাবরেটরি পরীক্ষা: প্রধানত ওবসট্রাকটিভ জন্ডিস যকৃতের disfunction পরীক্ষার মাধ্যমে ফসফাটেজ এর বৃদ্ধির হার দেখা যায়।
২। বি- আলট্রা সাউন্ডঃ পিত্তনালীর অবস্থান এবং আক্রান্ত স্থানের অবস্থা জানতে এটা করা হয়।
৩। এম আর সি পিঃ পিত্তনালীর ক্যান্সারের ছড়িয়ে পরার মাত্রা বা স্থান গুলো দেখার জন্য, বা লিভার মেটাস্ট্যাসিস ডায়াগনোসিস করতে এই পরীক্ষা গুরুত্বপূর্ন।
৪। সি টিঃ সিটি পরীক্ষা সঠিকভাবে cholangiectasis, পিত্ত এর অবস্থান এবং ক্ষত পরীক্ষনে ব্যবহার হয়।
৫। ERCP পরীক্ষা: ERCP পরীক্ষা সমগ্র পিত্ত বিস্তারের সাধারণ অবস্থা জানতে এবং পিত্তনালী ক্যান্সার কোষ সংগ্রহ করতে ব্যবহার করা হয়।
৬। PTC পরীক্ষা: PTC পরীক্ষা পরিষ্কারভাবে morphous এর ভিতরে বা অতিরিক্ত-হেপাটিকের পিত্তনালী ছড়িয়ে পড়া এবং প্রতিরোধক অবস্থান হিসেবে এর বন্টন প্রদর্শন করতে পারে সুতরাং, এটি একটি সঠিক পদ্ধতি থেকে পিত্তনালীর ক্যান্সার নির্ণ্যে সাহায্য করে।
সাধারণভাবে পিত্তনালী ক্যান্সার চিকিত্সা পদ্ধতি কি?
১। সার্জারি: বর্তমানে সার্জারি এখনো অধিকাংশ সাধারণ পিত্তনালী ক্যান্সাররের চিকিত্সা পদ্ধতি। এ পদ্ধতিতে নিম্নে দেয়া পিত্তনালী সার্জারি করা হয়ঃ
পিত্তনালী ক্যান্সার
পোর্টা হেপাটিস ক্যান্সার।
মধ্যম পিত্তনালী ক্যান্সার
নিন্ম পিত্তনালী ক্যান্সার
২। অন্যান্য চিকিত্সা: অক্জিলিয়ারী রঁজনরশ্মি দ্বারা এবং কেমোথেরাপি পিত্তনালী ক্যান্সার এর অন্যান্য চিকিৎসায় অন্যতম, তাই উভয় দুটি থেরাপির সার্জারির পরও ব্যবহার করা হয় ।
পিত্তনালী ক্যান্সারের জন্য নার্সিং পদ্ধতি কি?
লিভিং নার্সিং
১, পেরিওডিক্যাল রিভিও এর জন্য হসপিটালে যাওয়া।
২। প্রয়োজন মত বিশ্রাম নেয়া।
৩। নিয়মিত শারীরিক চর্চা বজায় রাখা
ডায়েট নার্সিং
১। এন্টি ক্যান্সার ফাংশন সমৃদ্ধ খাবার গ্রহন।
যেমনঃ ফাইবার জাতীয় খাবার বা তউফু
২। ক্ষত যাতে তাড়াতাড়ি শুকিয়ে যায় সে ধরনের খাবারও খেতে হবে।
৩। ডুমুর, আখরোট, তিল এ ধরনের খাবার এ ক্ষেত্রে অনেক সাহায্য করে।
নিয়ম মেনে চললে, বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ মেনে চললে, সঠিক নার্সিং সুবিধা পেলে এবং সঠিক সময়ে চিকিৎসা গ্রহনে এ রোগ থেকে মুক্তি পাওয়া সম্ভব।
ট্র্যাডিশনাল চাইনিজ মেডিসিন (টি সি এম) ও দেয়া যেতে পারেঃ
ট্রেডিশনাল চাইনিজ মেডিসিন গ্রহনের ফলে ক্যান্সার কোষ ধ্বংস করা সম্ভব। সামঞ্জস্যতা বজায় রেখে টিউমার প্রতিরোধ শক্তি বাড়িয়ে ক্যান্সার কোষ নির্মূলে উপযুক্ত প্রভাব ফেলে।
কি ধরনের সহায়তা পাওয়া যাবে?
প্র্যাকটিস প্রমান করে যে ক্লিনিকে পরিসেবা দল,অঙ্কোলজি,রোগবিদ্যা,পেশাদারী নার্স এবং নিয়মানুবর্তিতা ক্যান্সার রোগীর সেবার ক্ষেত্রে সর্বাধিক কার্যকরী ভূমিকা পালন করে। মডার্ন ক্যান্সার হসপিটালের ক্যান্সার চিকিৎসা এবং সেবার ক্ষেত্রে এসকল বিষয়ে বিশেষ ব্যবস্থা মেনে চলা হয়। উন্নত ডাক্তারি পরামর্শ,অনলাইন পরামর্শ,ই মেইলের মাধ্যমে চিকিৎসা পরামর্শ, মেডিক্যাল টিম গঠন করার মাধ্যমে রোগ নির্নয় করে সঠিক চিকিৎসা সেবা প্রদান এবং বন্ধুসুলভ পরিবেশ সুনিশ্চিত করা হয়।
scrollTop