প্রাথমিক পর্যায়ে সফট টিস্যু টিউমারে কিছু উপসর্গ লক্ষ্য করা যায়। ম্যালিগন্যান্ট সফট টিস্যু টিউমারে জ্বর, রক্তাল্পতা, ক্ষুধা- মন্দা, ওজন হ্রাসের মত উপসর্গ লক্ষ্য করা যায়। রোগীর শারীরিক অবস্থার উপর ভিত্তি করে নিম্নলিখিত পরীক্ষার সাহায্যে সফট টিস্যু টিউমার সনাক্ত করা হয়ঃ
এক্সরে পরীক্ষা: এক্সরের মাধ্যমে সফট টিস্যু টিউমারের পরিসীমা ও স্বচ্ছতা সম্পর্কে নিশ্চিত হওয়া যায়। স্পষ্ট সীমা বিশিষ্ট টিউমারকে ম্যালিগন্যান্ট সফট টিস্যু টিউমার বলা হয় , যা সিনোভিয়াল সারকোমা, রেবডোমিয়ো সারকোমা এর মধ্যে প্রায়ই দেখা যায়।
আলট্রাসাউন্ড ইমেজিং পরীক্ষা: এর সাহায্যে টিউমারের পরিধি ও সীমানা ,টিউমার টিস্যুর অভ্যন্তরীণ প্রতিধ্বনি, টিউমারটি প্রাথমিক পর্যায়ে বা ম্যালিগন্যান্ট পর্যায়ের কিনা ইত্যাদি নির্ণয় করা হয়। ম্যালিগন্যান্ট সফট টিস্যু টিউমারের বৈশিষ্ট্য হচ্ছে আকারে বড়, অস্পষ্ট সীমারেখা, এবং অস্পষ্ট প্রতিধ্বনি, যা সাধারণত সিনোভিয়াল সারকোমা, রেবডোমিয়ো সারকোমা এর মধ্যে দেখা যায়। আলট্রাসাউন্ড এর সাহায্যে বৃহদাকার টিউমারের মধ্যে আকু-পাংচার অ্যাস্পিরেশন সাইটোলজি পরীক্ষাও করা হয় ।
সিটি পরীক্ষা: সাম্প্রতিক সময়ে সিটি পরীক্ষা পদ্ধতির মাধ্যমে সফট টিস্যু টিউমারের ঘনত্ব এবং অবস্থান সনাক্ত করা হয়।
এমআরআই পরীক্ষা: এক্সরে এর মাধ্যমে সফট টিস্যু টিউমারের যে সকল বৈশিষ্ট্য নির্ণয় করা সম্ভব হয়না এমআরআই পরীক্ষার মাধ্যমে সেটি করা সম্ভব হয়। এর সাহায্যে সফট টিস্যু টিউমারের অনুদৈর্ঘ্য ছেদ, পরিসীমা স্তর ইত্যাদি সহজে নিরিক্ষন করা হয় , এছাড়া এ পরীক্ষার মাধ্যমে সফট টিস্যু টিউমারের রেট্রোপ্রিটোনিয়ালের পরিষ্কার চিত্র, টিউমার শ্রোণীচক্র, হাড় বা অস্থি মজ্জা ছড়িয়ে পড়েছে কিনা ইত্যাদি নির্ণয় করা হয়।এমআরআই পরীক্ষার ফলাফল এর উপর ভিত্তি করে চিকিৎসা পদ্ধতি পরকল্পনা করা হয়।
প্যাথলজিক্যাল পরীক্ষাঃ
সাইটো লজিক্যাল পরীক্ষাঃ এটি একটি সাধারণ , দ্রুত এবং নির্ভুল প্যাথলজিক্যাল পরীক্ষা পদ্ধতি। নিম্ন লিখিত পরিস্থিতিতে এ পরীক্ষা পদ্ধতি সবচেয়ে বেশি উপযুক্তঃ
a. ক্ষত বিশিষ্ট সফট টিস্যু টিউমারঃ টিউমার ফেটে গেলে সফট টিস্যু থেকে বের হয়ে আসা মলা বা চাঁছনি অর্জন পদ্ধতির মাধ্যমে কোষ নিয়ে ক্যান্সার নিশ্চিতকরণের জন্য আণুবীক্ষণিক পরীক্ষা করা হয়।
b. সফট টিস্যু টিউমারের ফ্লুরিয়াল তরল: টিস্যু থেকে মলা বা চাঁছনি অর্জন পদ্ধতি পর্যবেক্ষন করা হয়
c. আকুপাংচার অ্যাসপিরেশন পরীক্ষাঃ যে সকল টিউমার আকারে বড় এবং রেডিয়েশন অথবা কেমোথেরাপি দ্বারা চিকিৎসা করা হয় সে সকল ক্যান্সারের জন্য এ পরীক্ষা পদ্ধতি ব্যবহার করা হয়।
প্রোট্যাকটর বায়োপসিঃ এটি ব্যবহৃত হয় যখন সফট টিস্যু টিউমার ফেটে যায় এবং সাইটো লজিক্যাল পরীক্ষার মাধ্যমে টিউমারের মলা নির্ণয় সম্ভব না হয় তখন এ পরীক্ষা করা হয়ে থাকে।
ইনসিজিশনাল বায়োপসি: এটি প্রধানত সার্জারীতে ব্যবহৃত হয়।
এক্সিশনাল বায়োপসিঃ এটি সফট টিস্যু টিউমারের জন্য উপযুক্ত পরীক্ষা পদ্ধতি। এর দ্বারা স্বাভাবিক টিস্যু দিয়ে ঘেরা টিউমার টিস্যুকে কেটে নিয়ে পরীক্ষা করা সম্ভব হয়।
সফট টিস্যু টিউমারের উৎস অনেক জটিল হয়ে থাকে তাই সফট টিস্যু টিউমার নির্ণয়ের জন্য সময় ইম্যুনো হিস্টোকেমিস্ট্রি বা ইলেক্ট্রন মাইক্রোস্কোপ ব্যবহৃত হয়।
মডার্ণ ক্যান্সার হসপিটাল গুয়াংজৌ এর বিশেষজ্ঞগণ পরামর্শ দেন, সফট টিস্যু টিউমার প্রাথমিক পর্যায়ে নির্ণয় করা গেলে এর চিকিত্সায় ভাল ফলাফল পাওয়া যেতে পারে। অতএব, সফট টিস্যু টিউমার ধরা পড়ার সাথে সাথে হাসপাতালে নিয়মিত পরীক্ষা এবং চিকিত্সা করার জন্য অবিলম্বে যাওয়া উচিত।