বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
বোয়াই চেয়ারম্যান লিন-এর সঙ্গে বাংলাদেশি মিডিয়া প্রতিনিধিরা,
হাসপাতালের ভাইস প্রেসিডেন্ট লিন শাওহুয়ার সঙ্গে, বাংলাদেশি রোগী হাফেজ আহমেদ ভূঁইয়ার সঙ্গে কথোপকথন
গুয়াংঝু, চীন থেকে: ক্যান্সারের চিকিৎসা ব্যয় আমাদের এখানে সিঙ্গাপুরের চারভাগের একভাগ। একইসঙ্গে চিকিৎসাসেবা আর রোগীদের যত্নে মডার্ন ক্যান্সার হাসপাতাল গুয়াংঝু অনেক যত্নশীল। রোগ মোকাবেলায় রোগীদের মানসিক শক্তি যোগাতে এখানে আছে বিভিন্ন ধরনের ব্যবস্থাও।
দক্ষিণ চীনের গুয়াংঝু শহরে দেশটির অন্যতম শীর্ষ ব্যবসায়ী গ্রুপ বোয়াই এর প্রধান কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে সফররত বাংলাদেশি সাংবাদিকদের উদ্দেশে বলছিলেন প্রতিষ্ঠানের চেয়ারম্যান লিন ঝিচেং। তিনি জানালেন, তারা চান বাংলাদেশের রোগীরা গুয়াংঝু’র মডার্ন ক্যান্সার হাসপাতালের চিকিৎসাসেবা গ্রহণ করুক।
তিনি আরও জানান, ট্রাডিশনাল চাইনিজ চিকিৎসার সঙ্গে ওয়েস্টার্ন মেডিসিনের সংযোগ ঘটিয়ে এ হাসপাতালে বিভিন্ন ধরনের ক্যান্সার চিকিৎসায় ১৩ প্রকারের পদ্ধতি অনুসরণ করা হচ্ছে। এরমধ্যে ইমিউনোথেরাপি অন্যতম। এর মূল ধারণাটি হচ্ছে রোগীর শরীরের প্রতিরোধ ক্ষমতাকে বৃদ্ধি করে ক্যান্সার মোকাবেলা করা। এতে ঔষধ প্রয়োগজনিত কারণে রোগীর ওপরে পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া কম হয়, ফলে রোগী ক্যান্সারের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে অনেক বেশি সামর্থ্যবান হন।
মডার্ন ক্যান্সার হাসপাতালের আলোচিত একটি চিকিৎসা পদ্ধতির নাম ক্রাইয়োথেরাপি (Cryotherapy). এ পদ্ধতিতে বিশেষ কায়দায় ক্যান্সার আক্রান্ত স্থান অর্থাৎ টিউমারটিকে বরফে রূপান্তর করা হয়। এরপর বরফীভূত টিউমারটিকে নিষ্ক্রীয় করা হয়।
আরও বিশদভাবে বলতে গেলে, দুইটি সূচের মাধ্যমে টিউমারে দুই ধরনের গ্যাস (হিলিয়াম ও আরগন) প্রবেশ করিয়ে ক্যান্সার আক্রান্ত স্থানটির তাপমাত্রা মাইনাস ১২০ ডিগ্রি সেলসিয়াস-এ নামিয়ে আনা হয়। এরপর বরফীভূত টিউমারটিকে বরফের মতই ভেঙ্গে ফেলা হয়। ধ্বংস হওয়া টিউমারের উপাদান নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে (২ মাস) প্রস্রাবের সঙ্গে বেরিযে আসে শরীর থেকে।
এক নজরে মডার্ন হাসপাতালের চিকিৎসা পদ্ধতিগুলো হচ্ছে— পিইটি/সিটি (টিউমার শনাক্তকরণে ৯০% সক্ষম পদ্ধতি), গ্রিন কেমোথেরাপি (নতুন ধরনের রাসায়নিক পদ্ধতির ট্রিটমেন্ট), ইন্দো-পার্টিকেল নাইফ (নির্দেশনামূলক কায়দায় টিউমার ধ্বংস), অ্যান্ড্রোজেনিক ম্যাগনেটিক ফিল্ড থার্মাটোলজি (তাপপ্রয়োগের মাধ্যমে টিউমার কোষ ধ্বংস), ইন্টারভেনশনাল থেরাপি কাট্স টিউমার ব্লাড সাপ্লাই (রক্ত সরবরাহ বন্ধ রেখে টিউমার কোষ ধ্বংস), মিনিমালি ইনভেসিভ অ্যান্ড টারগেটেড থেরাপি উইথ কম্বিনেশন অফ চাইনিজ অ্যান্ড ওয়েস্টার্ন মেডিসিন (টিউমারের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে এককের চেয়ে দ্বৈত পদ্ধতি কার্যকর), বডি সেল ইমিউনো থেরাপি (জৈব পদ্ধতিতে ক্যান্সার/টিউমার চিকিৎসা), ফটোডাইনামিক থেরাপি (ফোটোন অর্থাৎ আলোর কণা দিয়ে টিউমার চিকিৎসা), ফোটোন নাইফ (থ্রি ডাইমেনশনাল রেডিওথেরাপি), টার্গেটেড জিন থেরাপি (জিন থেরাপির মাধ্যমে ক্যান্সারের মূলোৎপাটন), ক্রাইয়োথেরাপি (তাপমাত্রার হেরফের ঘটিয়ে টিউমারকে বরফীভূত করে ক্যান্সার কোষ হত্যা। এর মাধ্যমে মানব শরীরে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা স্বাভাবিকভাবে বৃদ্ধি পায় এবং ক্যান্সার কোষ শরীর থেকে বের করে দেওয়া হয়), আরএফএ (চাপ প্রয়োগের মাধ্যমে টিউমার ধ্বংস। তাপ দিয়ে টিউমারকে তরল করে ধ্বংস করা) এবং ক্যান্সার চিকিৎসার বাইরে হাসপাতালের সাধারণ চিকিৎসার মধ্যে আছে স্টেম সেল পদ্ধতি যার মাধ্যমে অন্ত্র, যকৃৎ ও ডায়াবেটিসের উপযুক্ত চিকিৎসা দেওয়া হয়।
বাংলাদেশি রোগীদের প্রতি তাদের আগ্রহের কারণ কী— জানতে চাইলে বোয়াই চেয়ারম্যান লিন বলেন, “২০ বছর আগে চীনের অর্থনীতি ভাল ছিল না। ওই সময় অন্য আরও অনেক কিছুর মত চায়নিজরা ভাল চিকিৎসাও পেত না। এরপর এলো পরিবর্তন। ১৯৭৮ সালে নেওয়া চীনের রিফর্ম পলিসির প্রথম সুবিধাপ্রাপ্ত চৈনিক শহর গুয়াংঝু। সেই সময় থেকে চীনের বর্তমান অর্থনৈতিক সমৃদ্ধির নেতৃত্বে থেকেছে গুয়াংঝু। এখন আমরা নিজেদের জন্য অত্যাধুনিক চিকিৎসা সেবা নিজেরাই নিশ্চিত করতে পারি। অপরদিকে বাংলাদেশে অনেক ক্যান্সার রোগী আছেন যারা বিদেশে চিকিৎসা নিয়ে থাকেন। আমরা কম খরচে সেই চিকিৎসা দিতে চাই। তাই বাংলাদেশি রোগীদের প্রতি আমরা আগ্রহ বোধ করছি। এই ক্ষেত্রে বাংলাদেশের সঙ্গে আমাদের ঐতিহ্যগত সম্পর্কটাও আমরা গুরুত্ব দিচ্ছি। আমরা বিশ্বাস করি Love Without Border অর্থাৎ ‘ভালবাসা সীমানাবিহীন’ আপ্তবাক্যে। আমরা ভিনদেশী রোগীদের সেবার মাধ্যমে এই ভালবাসা প্রকাশ করতে চাই।
বোয়াই চেয়ারম্যান লিন আরও বলেন, রিফর্ম পলিসির সুফল হিসেবে চীনে অন্যান্য ক্ষেত্রে লক্ষণীয় অগ্রগতি সাধিত হয়, সবকিছু দ্রুত বদলে যেতে থাকে। কিন্তু এই ধারা থেকে দূরে পড়ে ছিল চিকিৎসাক্ষেত্র। এর ফলে দক্ষিণের শহর গুয়াংঝুসহ বিশাল জনসংখ্যার দেশ চীনে চিকিৎসাটা সেকেলেই থেকে গিয়েছিল। এ অবস্থার পরিবর্তনে বোয়াই (BOAI) গ্রুপসহ অন্যরা এগিয়ে আসে। উন্নত বিশ্বের সমপর্যায়ের চিকিৎসা চীনাদের জন্য নিশ্চিত করার চ্যালেঞ্জ নিই আমরা। ১৯৮৯ সালে বোয়াই গ্রুপ একটি হাসপাতাল প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে চিকিৎসাসেবা ব্যবসায় আত্মপ্রকাশ করে। ১৯৯৪ সালে প্রতিষ্ঠা করা হয় বোয়াই মেডিকেল ম্যানেজমেন্ট কোম্পানি। পরের বছরই এ কোম্পানি মেডিকেল ম্যানেজমেন্ট গ্রুপ-এ পরিণত হয়। ১৯৯৮ সালে প্রতিষ্ঠা করে সাংহাই রিনাই হসপিটাল। ১৯৯৯ সালে স্টেট অফ দি আর্ট পর্যায়ের চিকিৎসাসেবা নিশ্চিত করতে প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতি সমৃদ্ধ হয় বোয়াই’র হাসপাতালগুলো।
২০০০ সালের জুনে আইএসও সনদ অর্জন করে প্রতিষ্ঠানটি।
এরপর একে একে আরও অনেক অর্জনের ধারাবাহিকতায় ২০০৫ সালে গুয়াংঝু শহরে প্রতিষ্ঠা করা হয় মডার্ন ক্যান্সার হসপিটাল। ২০১২ সালে মডার্ন ক্যান্সার হসপিটাল সম্পর্কযুক্ত হয় ইউনিয়ন ফর ইন্টারন্যাশনাল ক্যান্সার কন্ট্রোল (ইউআইসিসি) এর সঙ্গে।
গত ১২ বছরে চীনের চিকিৎসা ব্যবস্থার উন্নতির সঙ্গে তাল রেখে অনেক এগিয়েছে এই ক্যান্সার হসপিটাল। আমরা এখন মনে করছি, নিজেদের সঙ্গে সঙ্গে চীনের বাইরের মানুষের জন্যও এই চিকিৎসাসেবা নিশ্চিত করতে পারে মডার্ন ক্যান্সার হসপিটাল। আমরা চাই, অদূর ভবিষ্যতে চিকিৎসাসেবায় আন্তর্জাতিক পর্যায়েও নেতৃত্ব দেবে চীন। সে হিসেবে বিগত কয়েক বছরে এশিয়ার কয়েকটি দেশে যেমন ইন্দোনেশিয়া, ফিলিপাইন, ভিয়েতনাম, মালয়েশিয়ায় অফিস খোলে মডার্ন ক্যান্সার হসপিটাল। এরই ধারাবাহিকতায় বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকায়ও অফিস খোলা হয়।
এরই মধ্যে বাংলাদেশের বেশ কয়েকজন রোগী এখানে চিকিৎসা নিয়েছেন বলে জানান লিন। বর্তমানে চিকিৎসাধীন আছেন চট্টগ্রামের একজন রোগী।
ট্রাডিশনাল চাইনিজ চিকিৎসার সঙ্গে ওয়েস্টার্ন মেডিসিনের সংযোগ ঘটিয়ে এ হাসপাতালে বিভিন্ন ধরনের ক্যান্সার চিকিৎসায় ১৩ প্রকারের পদ্ধতি অনুসরণ করা হচ্ছে। এর মধ্যে ইমিউনোথেরাপি অন্যতম। এর মূল ধারণাটি হচ্ছে রোগীর শরীরের প্রতিরোধ ক্ষমতাকে বাড়িয়ে করে ক্যান্সার মোকাবেলা করা। এতে ঔষধ প্রয়োগজনিত কারণে রোগীর ওপরে পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া কম হয়, ফলে রোগী ক্যান্সারের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে অনেক বেশি সামর্থ্যবান হন।
চীনের বিভিন্ন প্রদেশে বোয়াই গ্রুপ শতাধিক হাসপাতাল পরিচালনা করছে। এর মধ্যে দক্ষিণ চীনের গুয়াংডং প্রদেশের রাজধানী গুয়াংঝু (সাবেক নাম ক্যান্টন) শহরে ২০০৫ সালে প্রতিষ্ঠা করা হয় মডার্ন ক্যান্সার হাসপাতাল। অত্যাধুনিক চিকিৎসা সেবার সুবিধাসমৃদ্ধ চীনের অনেক হাসপাতালের মধ্যে ক্যান্সার চিকিৎসার জন্য গুয়াংঝু’র মডার্ন ক্যান্সার হাসপাতাল বেশ সমৃদ্ধ। এটি গুয়াংঝু’র অগ্রসর এলাকা তিয়ানহে ডিস্ট্রিক্টে অবস্থিত। এর পাশেই আছে বিখ্যাত বু্ইয়ান পর্বতের দৃষ্টিনন্দন পরিবেশ। হাসাপাতাল থেকে সড়কপথে এয়ারপোর্টসহ সর্বত্র যাতায়াতের সুবিধা রয়েছে।
হৃদরোগ, বন্ধ্যাত্ব, সেক্সচেঞ্জ সার্জারিসহ ক্যান্সার চিকিৎসার ক্ষেত্রে বোয়াই মেডিকেল গ্রুপ যথেষ্ট পারঙ্গমতার স্বাক্ষর রেখেছে বলে জানান প্রতিষ্ঠানের চেয়ারম্যান লিন ঝিচেং।
এখানে বাংলাদেশি রোগীদের জন্য আছে আলাদা ডেস্ক। এই ডেস্কটির সামনে বাংলায় লেখা ‘ভালবাসা সীমানাবিহীন’ কথাটি। ভিনদেশে নিজভাষা বাংলায় লেখা এই কথাটি দেখে বেশ ভাল লাগলো।
প্রতিষ্ঠানটি বাংলাদেশে তাদের একটি অফিস করেছে।
সংবাদ সম্মেলনে বাংলানিউজের পক্ষ থেকে বোয়াই গ্রুপের চেয়ারম্যান লিন ঝিচেনকে প্রস্তাব করা হয়, তাদের ‘ভালবাসা সীমানবিহীন’ স্লোগানের সঙ্গে তাল রেখে বাংলাদেশি রোগীদের ক্ষেত্রে চিকিৎসা ব্যয় যেন কম রাখা হয়। জবাবে সেখানে উপস্থিত প্রতিষ্ঠানের ডেপুটি জেনারেল ম্যানেজার তু ঝিয়াও মিং-কে এ ব্যাপারে কার্যকরি পদক্ষেপ নেওয়ার নির্দেশ দেন তিনি। লিন বলেন, এটি একটি ভাল প্রস্তাব। এর ফলে বাংলাদেশি রোগীরা বেশিমাত্রায় সেখানে চিকিৎসা নিতে উৎসাহিত হবেন।
এর আগে বাংলাদেশ থেকে গুয়াংঝু’র মডার্ন ক্যান্সার হাসপাতাল দেখতে যাওয়া মিডিয়া প্রতিনিধিদের স্বাগত জানান বোয়াই চেয়ারম্যান লিনসহ হাসপাতালের চিকিৎসক-কর্মকর্তা ও স্টাফরা। বাংলানিউজসহ বাংলাদেশের ৬টি সংবাদ মাধ্যমের প্রতিনিধিদের ওই সফরে হাসপাতালের বিভিন্ন বিভাগ ঘুরে দেখানো হয়। বাংলাদেশি মিডিয়া প্রতিনিধিদের ভিডিও প্রজেক্টরের মাধ্যমে সরাসরি দেখানো হয় টিউমার নিস্ক্রিয়করণ অপারেশন। এসময় রোগীদের সঙ্গে কথা বলেন মিডিয়াকর্মীরা। বাংলাদেশি রোগী হাফেজ আহমেদ ভূঁইয়া চিকিৎসা খরচ আরও সাধ্যের মধ্যে আনা এবং রোগীদের চিকিৎসা সংক্রান্ত আগাম তথ্য আরও বেশি জানানোর দাবি করেন। মিডিয়াকর্মীরা বিষয়টি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে অবহিত করলে তারা এ ব্যাপারে দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেন।
বাংলাদেশে মডার্ন ক্যান্সার হাসপাতালের শাখা করার পরিকল্পনা আছে কি না প্রশ্ন করলে হাসপাতালের অনকোলজিকাল ডিপার্টমেন্টের পরিচালক অ্যাসোসিয়েট চিফ ফিজিশিয়ান ডা. বিল পেং বলেন, প্রথমে একটি অফিস, এরপর ক্লিনিক, তারপর মেডিকেল সেন্টার এবং সবশেষে হাসপাতাল প্রতিষ্ঠার বিষয়টি আসবে। সে পর্যন্ত যেতে আরও সময় লাগবে। তবে বাংলাদেশের কোনো মহল বিষেয়টি নিয়ে বিশেষ আগ্রহী হলে বিষয়টি নিয়ে ভাবা যেতে পারে।
চীনের সবচেয়ে বড় মেডিকেল সার্ভিস গ্রুপ বোয়াই বর্তমানে সাংহাইয়ের ইয়োডাক এলাকায় তাদের স্বপ্নের প্রজেক্ট ইন্টারন্যাশনাল হেল্থ কেয়ার সিটি বাস্তবায়নের পথে রয়েছে।
যোগাযোগ
গুয়াংঝু’র মডার্ন ক্যান্সার হাসপাতালের সেবা পেতে হলে প্রথমত আপনি www.asiancancer.com ওয়েব অ্যাড্রেসে মডার্ন ক্যান্সার হসপিটাল গুয়াংঝু সম্পর্কে জানতে লগ ইন করতে পারেন।
অথবা, ঢাকায় হাসপাতালের স্থানীয় প্রতিনিধির সঙ্গে ফোনে যোগাযোগ করে চিকিৎসা সংক্রান্ত যাবতীয় তথ্য পেতে পারেন। ঢাকার ঠিকানা হচ্ছে: নাভানা টাওয়ার, ৯ তলা, স্যুইট#সি, গুলশান#১, সেলফোন: 01775-105555; 01775-106666
এখানে শুধুমাত্র একটি ফোন কলের মাধ্যমে বাংলাদেশি রোগীরা গুয়াংঝুর মডার্ন ক্যান্সার হাসপাতালের চিকিৎসা সেবার নাগাল পেতে পারেন। এখানে রোগীর ট্রিটমেন্ট হিস্টরি জানানোর পরবর্তী ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে তার জন্য করণীয় উপযুক্ত চিকিৎসার প্রস্তাব (সম্ভাব্য খরচের পরিমাণসহ) দেওয়া হবে। এরপর রোগী ও তার অ্যাটেনডেন্টের পাসপোর্ট, ১ কপি করে ছবি ও আইডি কার্ডের ফটোকপি জমা দিতে হবে ভিসার জন্য। অথবা রোগী বা তার স্বজন সরাসরি চায়না অ্যাম্বেসি বা কোনো ট্রাভেল এজেন্সির সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারেন।
ভিসা ও টিকিট হয়ে যাওয়ার পর আপনি স্থানীয় প্রতিনিধিকে তারিখ ও সময় জানাবেন। এরপর হাসপাতালের উদ্দেশে রওনা। চীনের গুয়াঝু’র বাইয়্যুন আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ শেষে বাইরে হাসপাতালের স্টাফ নার্সদের গাড়িসহ অপেক্ষমান পাবেন। তারা আপনাকে সরাসরি আপনার কেবিনে নিয়ে যাবে। এরপর শুরু হবে চিকিৎসা।
হাসপাতালেই আছে রোগীর অ্যাটেনডেন্ট বা সঙ্গীর থাকার ব্যবস্থা। মনপসন্দ খাবার রান্না করে খাওয়ার জন্য আছে রান্নাঘরও। ভিআইপি কেবিনে আছে আলাদা রান্নাঘর। আছে বাংলাদেশি দোভাষীর ব্যবস্থাও।
হাসপাতালে যেসব সুবিধা পাবেন: রুম সার্ভিস, ফ্রি লন্ড্রি সার্ভিস, ফ্রি ইন্টারনেট অ্যাকসেস, ফটোকপি, ফ্যাক্স, মেইল এক্সপ্রেস সার্ভিস, স্পেশাল প্রাইভেট কেয়ার সার্ভিস, ধর্মীয় আচার পালনের ব্যবস্থা, লোকাল ট্যুরিজম অ্যাসিস্ট্যান্স (স্থানীয় পর্যটন স্পটগুলো ঘুরে দেখার জন্য), নিজ পছন্দের ডায়েট অর্থাৎ হালাল খাবার, নিরামিষ ভোজ বা বিশেষ পুষ্টিকর খাবারের ব্যবস্থা।