বাও শিতাওয়ের জীবনবৃত্তান্ত
চিকিৎসাবিদ্যাকে ভালবাসো এবং প্রবল উৎসাহের সাথে কাজ করো।
বাও শিতাও জিনঝুও মেডিকেল কলেজ, লিয়াওনিং থেকে স্নাতক ডিগ্রী অর্জনের পর থেকেই বিগত ২০ বছর যাবৎ হৃদরক্তনালী, ক্যান্সারবিদ্যা এবং অন্যান্য প্রাণঘাতী রোগ নিয়ে কাজ করে যাচ্ছেন। বর্তমানে তিনি মডার্ণ ক্যান্সার হাসপাতাল, গুয়াংঝু-এর প্রধান চিকিৎসক পদে কর্মরত আছেন। পরিচালক বাও সেইসব বছরগুলোয় কাজ করার সময় অনেক প্রতিকূলতার সম্মুখীন হয়েছিলেন, কিন্তু রোগনিরাময়ের প্রতি তার ভালবাসার ফলশ্রুতিতে তিনি সকল বাধা পেরিয়ে লক্ষ্যের দিকে এগিয়ে যেতে সমর্থ হন। চিকিৎসাবিদ্যার অগ্রগতির সাথে তাল মিলিয়ে চলার জন্য পরিচালক বাও দুইবার বেইজিং ফু ওয়াই হাসপাতালে অধিকতর অধ্যয়নের জন্য গমন করেন। এর পাশাপাশি তিনি চিকিৎসাশিল্পের সাথে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিবর্গের সাথে নিয়মিত যোগাযোগ, চিকিৎসাশাস্ত্র বিষয়ক আধুনিক বই-পুস্তক অধ্যয়ন এবং আলোচনাসভায় যোগদানের মাধ্যমে তার জ্ঞানের পরিধি ক্রমশ বৃদ্ধি করছেন।
অভিজ্ঞতা, জ্ঞান এবং ধারণার উপর ভিত্তি করে তিনি “ন্যাশনাল মেডিক্যাল জার্নাল অব চায়না” তে এ পর্যন্ত সাতটি গবেষণাপত্র প্রকাশ করেছেন, যথাঃ ডায়াগ্নোসিস এণ্ড ট্রিটমেণ্ট টু একিউট মাইওকার্ডিয়াল ইনফার্কশন অন রাইট ভেন্ট্রিক্ল, ডায়াগ্নোসিস এণ্ড ট্রিটমেণ্ট টু ইডিওপ্যাথিক ভেন্ট্রিকুলার টেকিকার্ডিয়া ইত্যাদি। এছাড়া অন্যান্য চিকিৎসাবিদদের সাথে তিনি “ক্লিনিক্যাল ইসিজি ডায়াগনোসিস” নামক বই রচনায় কাজ করেছিলেন।
হৃদরোগ নিরাময় এবং বিপুল সংখ্যক হৃদরোগাক্রান্তদের স্বার্থে পরিচালক বাও অসুস্থদের সাহায্য করা জীবনের ব্রত হিসেবে নিয়েছেন। পরিচালক বাও সাধারণ জরুরি এবং গুরুতর অসুস্থতা যেমন রেসপিরেটরি এণ্ড কার্ডিয়াক এরেস্ট, একিউট মাইওকার্ডিয়াল ইনফার্কশন, এহৃথমিয়া, লাং ইনফার্কশন, হাইপারটেন্সিভ ডিজিজ, আপার গ্যাস্ট্রোইন্টেস্টিনাল ব্লিডিং, ভ্যারিয়াস শক, একিউট ইনটক্সিকেশন ইত্যাদির চিকিৎসায় দক্ষ। এছাড়া তিনি সংকটময় ক্যান্সার রোগীদের চিকিৎসা করে এবং তাদের সুস্থ করে তিনি প্রভূত অভিজ্ঞতা অর্জন করেছেন। চিকিৎসাশিল্পে তার প্রথম প্রবেশের স্মৃতি স্মরণ করে তিনি বলেন সেইসময় রোগনিরাময় করতে প্রচুর সমস্যার সম্মুখিন হতে হতো। বর্তমানে আরোগ্য লাভের নিমিত্তে অসুস্থকে সাহায্য করা, রোগীর যন্ত্রণা লাঘব করা এবং রোগীর আর্থিক সামর্থ্য অনুযায়ী তাকে সর্বোচ্চ চিকিৎসাপ্রদানের লক্ষ্যে পরিচালক বাও কাজ করে যাচ্ছেন।
প্রাথমিকভাবে রোগীর সমস্যা চিহ্নিত করার জন্য পরিচালক বাও রোগীর অবস্থা প্রতিনিয়ত পর্যবেক্ষণ করেন এবং অস্ত্রোপচার পরবর্তী জটিলতা নিরসনে সতর্কতার সাথে প্রয়োজনীয় চিকিৎসাকার্য সম্পন্ন করেন। যেহেতু অস্ত্রোপচার পরবর্তী চিকিৎসায় পরিচালক বাও বিশেষজ্ঞ, তাই যখন রোগী অস্ত্রোপচারের পরে বুকের ব্যথা-বেদনায় ভোগে, অনিয়মিত হৃদ-স্পন্দন,শ্বাসকষ্ট ইত্যাদি সমস্যা দেখা দেয় তখন তিনি যথাশীঘ্র তাদের যন্ত্রণা দূরীকরণে ব্যবস্থা গ্রহণ করেন।
“রোগীর অবস্থা হচ্ছে আদেশ, সময় হচ্ছে জীবন”- হলো পরিচালক বাও এর মৌলিক প্রেরণা। তিনি ইন্টেন্সিভ কেয়ার ইউনিটে অনেক আনন্দ-বেদনার সাক্ষী, রোগীর পরিবার-পরিজনের শোক তাকে ছুঁয়ে যায়। ধীরে ধীরে তিনি নিজের মনের অবস্থাকে নিয়ন্ত্রণ করতে এবং পরিস্থিতির সাথে মানিয়ে নিতে শিখেছেন এবং নেতিবাচক আবেগ যা তার কাজ এবং রোগীকে প্রভাবিত করে তা এড়িয়ে চলা রপ্ত করেছেন।
বিশ বছরের চিকিৎসাজীবনে পরিচালক বাও অসংখ্য সংকটাপন্ন রোগী দেখেছেন যাতে তিনি মানবজীবনের নাজুক দশাকে গভীরভাবে উঅনুভব করেছেন। তিনি উপলব্ধি করেন জীবন ও মৃত্যুর মাঝে কেবলই একটি সরলরেখাসম দুরত্ব যেখানে অর্ধ-সেকেন্ডের জন্যও দ্বিধার অবকাশ নেই। পরিচালক বাও দায়িত্ববোধের সাথে তার কাজের গুরুভার বহন করে চলেছেন এবং তিনি আরো বহুদূর যাওয়ার লক্ষ্যে অটুট।