লিং জিং জন্মগ্রহণ করেন ১৯৭৬ সালে এবং ক্লিনিক্যাল মেডিসিন ডিসিপ্লিন, ঝংসান মেডিক্যাল ইউনিভার্সিটি থেকে তিনি স্নাতক অর্জন করেন। বর্তমানে তিনি মডার্ণ ক্যান্সার হাসপাতালে চিকিৎসক পদে কর্মরত আছেন।তিনি সমন্বিত চিকিৎসায় বিশেষজ্ঞ যেমন কেমোথেরাপি, রেডিওথেরাপি এবং টার্গেট থেরাপি ইত্যাদি। এছাড়া মিনিম্যালি ইনভেসিভ থেরাপি যথা ইণ্টারভেনশনাল থেরাপি, আয়োডিন সিড ইমপ্লান্টেশন, আর্গন-হিলিয়াম ক্রাইওসার্জারী, রেডিও ফ্রিকোয়েন্সি এবলেশন(অপসারণ) ও ক্যান্সার বিষয়ক যেকোন জটিলতা প্রতিরোধের ব্যাপারে লিন জিং সম্যক জ্ঞান রাখেন।
সদাসতর্ক এবং খুঁটিনাটি বিষয়ের প্রতি যত্নবান
লিন জিং সর্বদা তার সতর্কতা এবং খুঁটিনাটি বিষয়ের উপর জোর দেওয়া অব্যাহত রাখেন যে প্রবণতা মেডিক্যাল কলেজের শিক্ষার্থী থাকাকালীন তাঁর দশ বছরের চিকিৎসাজীবনে তৈরী হয়েছিল।লিং জিং ক্যান্সারের বিভিন্ন রকম চিকিৎসায় দক্ষ। প্রতিটি নিরাময় পরিকল্পনায় ঔষধের মাত্রা, বাস্তবায়নের তীক্ষ্ণতা, প্রশমন, প্রতিক্রিয়া এবং প্রতিটি অনিশ্চিত জটিলতার লক্ষণ এবং কার্যকারণ তিনি দৃঢ়চিত্তে মনে করতে পারেন।
“যেহেতু ক্যান্সার রোগীদের শারীরিক অবস্থা এমনিতেই অনেক দূর্বল থাকে, অতএব সামান্য বেশি মাত্রার ঔষধ অথবা পরিকল্পনায় কোন ঘাটতি রোগীকে প্রচণ্ড ব্যথার দিকে ঠেলে দেয়। তাই ঔষধের ব্যবস্থাপত্রে কোন ভুলত্রুটি অনুমোদিত নয়।”-লিং জিং
বিবিধ চিকিৎসা পরিকল্পনার চুলচেরা বিশ্লেষণ এবং রোগীর শারীরিক লক্ষণগুলোর সতর্ক পর্যবেক্ষণের ফলশ্রুতিতে তাঁর আওতাধীন আরোগ্যপ্রার্থীর বিভিন্ন জটিলতা যেমন নিরাময় চলাকালীন প্রতিরোধ ও নিষ্কাশন এবং রক্তক্ষরণ ও প্রদাহ অনেকাংশে প্রশমিত হয়, পাশাপাশি বহু অনাকাঙ্ক্ষিত যন্ত্রণাও দূরীভুত হয়।
নিজেকে রোগীর আত্মীয় ও বন্ধু ভাবেন
“আমার সবচেয়ে বেশি আনন্দিত হই যখন আরোগ্যপ্রার্থীরা আমাকে তাদের বন্ধু মনে করে এমনকি আত্মীয়ের দৃষ্টিতে দেখে এবং আমাকে তার জীবন দিয়ে বিশ্বাস করে। আমি তাদের সাহায্য করার সর্বোচ্চ চেষ্টা করি।”
-বলেছেন লিং জিং যিনি তার পেশাগত জ্ঞানের প্রাচূর্য এবং হৃদয়ের উষ্ণতা দিয়ে অসুস্থদের নির্ভরতা অর্জন করতে পেরেছেন। তিনি তার জীবন-সঙ্গী এবং সন্তানের নিকট হতে সর্বদা দ্বিধামুক্ত সমর্থন পান যখন তিনি অতিশয় ব্যস্ত থাকেন। তিনি নিজেকে রোগীর আত্মীয় ভাবতেই পছন্দ করেন যাতে যেকোন মূহুর্তে তিনি প্রয়োজনমত সাহায্য করতে পারেন।
অগণিত রোগীর জীবন বাঁচিয়ে তার চিকিৎসাশাস্ত্রে দক্ষতা সর্বজনস্বীকৃত
লিভার ক্যান্সার, ফুসফুস ক্যান্সার, ন্যাসোফ্যারিঞ্জিয়াল কার্সিনোমা এবং কিডনী ক্যান্সার ইত্যাদিতে আক্রান্ত রোগীরা লিং জিং এর আওতাধীনে থেকে স্বাস্থ্য পুনরুদ্ধার করার ফলে তার খ্যাতি সবদিকে ছড়িয়ে পড়েছে। মার্চ ২০১২ সালে মিস্টার গুয়ো, ৬২ বছর বয়স্ক একজন বৃদ্ধ জাকার্তা,ইন্দোনেশিয়া থেকে মডার্ণ ক্যান্সার হাসপাতালে অধিকতর চিকিৎসার জন্য গমন করেন। প্রস্রাবে রক্ত দেখতে পেয়ে তিনি স্থানীয় হাসপাতালে রোগ নিরুপণের জন্যে গেলে মে ২০১১ তে তার ডান কিডনীতে ক্যান্সার হয়েছে বলে প্রতিবেদন দেওয়া হয়। স্থানীয় চিকিৎসক তাকে অপারেশন এবং কেমোথেরাপি গ্রহণের পরামর্শ দেন কিন্তু বৃদ্ধ বাস্তবতা মানতে অস্বীকার করে তা প্রত্যাখ্যান করেন।
যাইহোক, মিস্টার গুয়োর অবস্থার ক্রমশ অবনতি ঘটতে থাকলে তিনি অবশেষে এই হাসপাতালে চিকিৎসার জন্যে পৌঁছান। তার দায়িত্বপ্রাপ্ত চিকিৎসক হিসেবে লিন জিং কয়েকবার তার ইন্টারভেনশনাল ইম্বোলাইজেশন ট্রিটমেন্ট এবং সিড ইমপ্লান্টেশন করান। প্রতিদিন লিন জিং মিস্টার গুয়োর লক্ষণ, ঔষধ সেবন এবং অন্যান্য পথ্য বিস্তারিতভাবে লিপিবদ্ধ করতে থাকেন। শীঘ্রই মিস্টার গুয়োর ক্যান্সার একটি নিয়ন্ত্রিত দশায় উপনীত হয়। ২ মাস চিকিৎসার পর মিস্টার গুয়োর ডান কিডনীর টিউমার সংকুচিত হয় এবং প্রস্রাবে রক্তের উপস্থিতি অদৃশ্য হয়ে যায়। মিস্টার গুয়ো তার ক্ষুধানুভূতি ও নিদ্রাকাঙ্ক্ষা ফিরে পান এবং তার ওজন পরবর্তী পরীক্ষাকালে পাঁচ কেজি বৃদ্ধি পায়। জাকার্তা প্রত্যাবর্তনের পূর্বে মিস্টার গুয়ো চিকিৎসকদের বলেন, “রোগনিরাময়ের জন্য আপনাদের এবং ডক্টর লিন জিংকে তার পেশাগত বলিষ্ঠ দৃষ্টিভঙ্গির জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ।”
ন্দোনেশিয়ান রোগী মিস্টার গুয়ো(বাম হতে তৃতীয়), ডাক্তার লিন জিং(ডান হতে দ্বিতীয়)এবং অন্যান্য চিকিৎসকদের যৌথ আলোকচিত্র